জম্মু-কাশ্মীরে শীঘ্রই যে সরকার গঠিত হতে চলেছে, সেই সরকারে আর কি কোনও গুরুত্বই থাকল না কংগ্রেসের? এহেন প্রশ্ন উত্থাপনের কারণ হল, ইতিমধ্যেই এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সর্বাধিক আসনপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এসি)-এর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সদ্য নির্বাচিত চারজন নির্দল বিধায়ক।
উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় মোট আসন রয়েছে ৯০টি। অর্থাৎ, সরকার গড়ার 'ম্যাজিক ফিগার' হল, ৪৬। এবারের নির্বাচন এনসি ও কংগ্রেসের জোট পেয়েছে মোট ৪৮টি আসন। এর মধ্যে এনসি একাই জিতেছে ৪২টি আসনে। আর কংগ্রেসের দখলে এসেছে মোট ছ'টি আসন।
এই অবস্থায় জোট হিসাবে এনসি এবং কংগ্রেসের সরকার গঠনে কোনও বাধা না থাকলেও ন্যাশনাল কনফারেন্সকে অবশ্যই কংগ্রেসের উপর নির্ভরশীল থাকতে হত। কিন্তু, এবার চারজন নির্দল বিধায়ক এনসি-কে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জোটসঙ্গী কংগ্রেসের আর তেমন গুরুত্ব রইল না। কারণ, এনসি-কে সরকার গড়ার জন্য আর তাদের উপর নির্ভর করতে হবে না।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে, যে চারজন নির্দল বিধায়ক ওমর আবদুল্লার দলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা হলেন - প্যায়ারে লাল শর্মা, সতীশ শর্মা, চৌধুরী মহম্মদ আক্রম এবং ড. রামেশ্বর সিং। এঁদের জয়ী আসনগুলি হল যথাক্রমে - ইন্দরওয়াল, ছাম্ব, সুরানকোট এবং বানি।
এই চার নির্দল বিধায়কের সমর্থনের ফলে ন্যাশনাল কনফারেন্স এককভাবেই ম্যাজিক ফিগার ৪৬ অর্জন করে ফেলল। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের ব্যাখ্যা হল, কংগ্রেসকেই এখনই অপ্রয়োজনীয় বলে ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই।
কারণ, আপাতত চার নির্দল বিধায়কের সমর্থন সঙ্গে থাকলেও, যেকোনও মুহূর্তে তাঁদের মধ্যে একজনও যদি সমর্থন তুলে নেন, বা কোনওভাবে এনসি-র কোনও বিধায়ক যদি সমস্যা তৈরি করেন, তখন ওমরের দলের পক্ষে সরকার টিকিয়ে রাখা চাপের হয়ে যাবে।
তাই, সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, সবদিক ভেবে দেখে ন্যাশনাল কনফারেন্স অন্তত এখনই কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ত্যাগ করবে না। অন্যদিকে, হরিয়ানা নির্বাচনে আশা জাগিয়েও শেষমেশ বিজেপির কাছে পরাস্ত হতে হয়েছে কংগ্রেসকে। তাই তারাও উপত্যকায় সরকার পক্ষের সঙ্গে জোটে থাকাই রাজনৈতিকভাবে শ্রেয় বলে মনে করবে।
কারণ, একক দল হিসাবে দেখলে এবং বিধানসভার আসন সংখ্যার বিচারে, জম্মু-কাশ্মীরেও কংগ্রেসের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে তাদের কট্টর বিরোধী বিজেপি।
বস্তত, জম্মু অঞ্চলে বিজেপির দাপট ভালোই রয়েছে। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাদের ঝুলিতে এসেছে ২৯টি আসন। উপরন্তু, ইতিমধ্যেই তাদের সমর্থন করার কথা ঘোষণা করেছেন বাকি তিন নির্দল বিধায়ক (এবারের নির্বাচনে নির্দল প্রার্থীদের মধ্যে জয়ী হয়েছেন মোট সাতজন)। ফলে উপত্যকায় বিজেপি ও তাদের সমর্থনকারী বিধায়কদের মিলিত সংখ্যা এখন ৩২। যা কংগ্রেসের জন্য ভালো খবর নয় মোটেই।