মাগুরা ধর্ষণের শিকার হওয়া বালিকার মৃত্যু হল। আর তারপর ঘুরিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় তুললেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা বর্তমানে 'জাতীয় নাগরিক দল' (এনসিপি)-এর অন্যতম নেতা সারজিস আলম! এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর আজই (বৃহস্পতিবার - ১৩ মার্চ, ২০২৫) ঢাকার হাসপাতালে মৃত্যু হয় আট বছরের ওই বালিকার। আর, তারপরই এই ঘটনার জন্য সরাসরি পূর্বতন হাসিনা সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন সারজিস!
এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি হল, এই বালিকার সঙ্গে যা ঘটেছে, তা ঘটতই না, যদি আজ থেকে ৫ কিংবা ১০ বছর আগে (যে সময় বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার ছিল) ঘটা ধর্ষণের মামলাগুলিতে দ্রুত ও ন্য়ায্য বিচার হত। সারজিসের বক্তব্য, ওই সময় যখনই কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটত, সেই মামলাগুলির বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দেখা যেত। যদি সেই সময় এমনটা না হত, তাহলে গত ৬ মার্চ (২০২৫) মাগুরা ধর্ষণ কাণ্ড ঘটতই না।
পাশাপাশি ধর্ষকদের দ্রুত বিচার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি - অর্থাৎ - মৃত্যুদণ্ডের পক্ষেও সওয়াল করেছেন সদ্য মূল ধারার রাজনীতিতে পা দেওয়া সারজিস আলম। তাঁর বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনায় ৯০ দিনের মধ্য়েই সমস্ত তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দোষীকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে। আর যাতে কখনও বাংলাদেশে এমন ঘটনা না ঘটে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে এদিন দুপুরেই নিজের দফতরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন বাংলাদেশের কেয়ারটেকার সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি জানান, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। তাঁর দাবি, এদিনই নিহত বালিকার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রশাসনের হাতে চলে আসবে।
এদিকে, এই ঘটনায় আগেই এক মহিলা-সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে তিন পুরুষের ডিএনএ নমুনা এবং নিগৃহীতা বালিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করার সময়েই তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই সমস্ত ডিএনএ রিপোর্ট আগামী পাঁচ দিনের মধ্যেই চলে আসবে। সেক্ষেত্রে আগামী সাতদিনের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে। যদিও বিচারপ্রক্রিয়া কত দিন চলবে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৬ মার্চ দুপুরে ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের ওই বালিকা। সে মাগুরা শহরতলির একটি গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানেই ঘটে ওই পৈশাচিক ঘটনা।
সেই ঘটনার পর প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন অবস্থার অবনতি হলে নিগৃহীতাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে বাচ্চাটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। গত শুক্রবার রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা করা গেল না।