অবশেষে ভোটের ঠিক আগে নিজ মুখে মনের কথা বললেন তিনি। মানলেন, তিনিও হতে চান মুখ্যমন্ত্রী। আগামী নভেম্বর মাসেই বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মহারাষ্ট্রে। তার আগে নিজের এই মনোবাসনা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করলেন এনসিপি সভাপতি তথা রাজ্যের বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার।
পুণের বিখ্যাত দগুশেঠ হালওয়াই গণপতি মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর এই প্রসঙ্গে অজিত বলেন, 'সকলেই চান. তাঁদের নেতা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হোন। আমি যখন একথা বলছি, তখন আমি নিজেও ওই পদে নিজেকে দেখি। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী হতে গেলে সেই ব্যক্তিকে যথাযথ জনমত পেতে হবে। সকলের আশা তো আর পূর্ণ হয় না।'
অজিত আরও বলেন, 'সকলেরই নিজস্ব মতামত ও ইচ্ছা রয়েছে। কিন্তু, সবাই যা চায়, তা পায় না। তবে, এর জন্যই ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর সকলকে ভোটাধিকার দিয়েছেন। আর শেষ পর্যন্ত সবটা ভোটদাতাদেরই হাতে রয়েছে। তাছাড়া, রাজ্যের বিধানসভায় মোট আসন রয়েছে ২৮৮টি। তার অর্ধেক অর্থাৎ ১৪৫টি (ম্য়াজিক ফিগার) আসন তো অন্তত পেতে হবে।'
নিজের এহেন মনোবাঞ্ছা প্রকাশ করলেও সাবধানী অজিত সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, বর্তমানে তিনি ও তাঁর দল এক মহাজোটের অংশ। সেই জোটে এনসিপি ছাড়াও রয়েছে শিবসেনা ও বিজেপি। এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা সকলেই শিবসেনা নেতা তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের অধীনে লড়াই করবেন।
অজিতের কথায়, 'আমরা সকলেই সমবেতভাবে চেষ্টা করছি যাতে পুনরায় মহাজোটের সরকার ক্ষমতায় ফেরে। মহাজোট ফের সরকার গড়লে তখন আমরা সকলে মিলে আলোচনায় বসব এবং ঠিক করব, কে হবেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মহাযুতি (মহাজোট) লড়াই করবে।'
একদিকে যখন, ভোটপর্ব শুরু হওয়ার আগেই শিবসেনার নেতা ও কর্মীরা ফের একবার একনাথ শিণ্ডেকে মারাঠা মসনদে বসাতে উদ্যোগ শুরু করে দিয়েছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে অজিত পাওয়ারের মুখ্যমন্ত্রী হতে চাওয়া সংক্রান্ত এই মন্তব্য সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রশ্ন উঠছে সরকার পক্ষের অন্দরের স্থিতি নিয়ে।
খেলা শুরু হয়েছে বিজেপি শিবিরেও। তারা চাইছে, ফের একবার দেবেন্দ্র ফড়নবীশকেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে ফিরিয়ে আনা হোক। এমনকী, নিজেদের উদ্দেশ্যে সফল হতে তারা গণপতি বাপ্পার আশীর্বাদও নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে অজিত পাওয়ারের অনুগতরা রাজ্যের নানা প্রান্তে পোস্টার সাঁটাতে শুরু করে দিয়েছেন। সেইসব পোস্টারে এনসিপি নেতাকেই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে সম্প্রতি বলতে শোনা গিয়েছিল, 'মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই সিদ্ধান্ত নির্বাচনের পরই নেবে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের সংসদীয় পর্ষদের উপর সেই দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। এনডিএ-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা সেটাই মেনে নেব। একনাথ শিণ্ডে বর্তমানে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাই আমরা তাঁর নেতৃত্বেই এবার ভোটে লড়ব।'