আবারও একবার সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার কার্যত খোলনলচে বদলে দেওয়ার বার্তা দিল সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া রাজনৈতিক দল 'জাতীয় নাগরিক পার্টি' বা 'ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি' (এনসিপি)। তাদের নয়া দাবি হল, আর ১৮ বছর নয়, আগামী দিনে বাংলাদেশের যেকোনও নির্বাচনে ভোটদানের অধিকার দেওয়া হোক ১৬ বছর বয়সেই! অর্থাৎ - একজন ব্যক্তি নাবালক থেকে সাবালক হওয়ার আগেই যাতে নির্বাচনে পছন্দের রাজনৈতিক দলগুলিকে ভোট দিতে পারে, সেই প্রস্তাবই রাখল তরুণদের নিয়ে গঠিত এনসিপি!
একইসঙ্গে তাদের আবেদন, ভোটে দাঁড়ানোর বয়স ২৫ বছর থেকে কমিয়ে ২৩ বছর করা হোক। যদিও ইতিমধ্য়েই মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব মেনে ভোটে দাঁড়ানোর ন্যূনতম বয়স ২১ বছর করার কথা বলেছে সংশ্লিষ্ট সংবিধান সংস্কার কমিশন। কিন্তু, এনসিপি নেতৃত্ব মনে করছে, ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ২১ বছর বয়সটা খুবই কম হয়ে যাবে!
প্রসঙ্গত, মহম্মদ ইউনুস প্রশাসনের সুরে সুর মিলিয়েই একেবারে জন্মলগ্ন থেকে জাতীয় নির্বাচনের থেকে সংস্কারের উপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে এনসিপি। শুধু তাই নয়, তারা গণ পরিষদ গঠন নিয়েও জোর সওয়াল করছে। তাদের বক্তব্য, সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হলে গণ পরিষদের নির্বাচন করতে হবে। এই গণ পরিষদই পরবর্তীতে আইন সভায় (পার্লামেন্ট) পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্য়েই বিএনপি এই গণ পরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, যেখানে দেশে ইতিমধ্য়েই আইনসভা বা পার্লামেন্টের একটি কাঠামো বিদ্যমান রয়েছে এবং যা সংবিধান স্বীকৃতও বটে, তাহলে এই গণ পরিষদের ভাবনা বা প্রয়োজন আসছে কোনও যুক্তিতে? যদিও এনসিপি এখনও তাদের অবস্থানে অনড়। বস্তুত, তারা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে খুব তাড়াহুড়োও করছে না। যতটা বিএনপি বা অন্য়ান্য রাজনৈতিক দলগুলি করছে।
শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) ঢাকার রূপায়ণ সেন্টারে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে এনসিপি। সেখানেই ভোটদান এবং ভোটে দাঁড়ানোর বয়স কমানোর বিষয়টি নিয়ে তাদের প্রস্তাব ঘোষণা করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।
তিনি জানান, 'আগামিকাল (রবিবার - ২৩ মার্চ, ২০২৫) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার সুপারিশমালা জমা দেওয়া হবে। তাতেই ভোট দেওয়ার বয়স কমিয়ে ১৬ বছর এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স কমিয়ে ২৩ বছর করার প্রস্তাব পেশ করবে এনসিপি।'