শিক্ষাক্ষেত্রে বড়সড় সংস্কারের পথে হাঁটল কেন্দ্র। নয়া শিক্ষা নীতিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। যেমন - তুলে দেওয়া হল এম.ফিল, পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড স্নাতক কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একনজরে দেখে নিন নয়া শিক্ষা নীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় -
দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিদেশে ক্যাম্পাস গড়ে তুলবে। নির্দিষ্ট কয়েকটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে (যেমন - বিশ্বের সেরা ১০০ টি বিশ্ববিদ্যালয়) ভারতে ক্যাম্পাস চালুর অনুমতি দেওয়া হবে।
'ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন' (এনআরএফ) গঠন করা হবে। সেটি স্বশাসিত সংস্থা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে গবেষণা করার সংস্কৃতি গড়ে তুলবে এনআরএফ।
২০৩৫ সালের মধ্যে 'গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিয়ো' ৫০ শতাংশ করার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। যাঁরা মাঝপথে কোনও স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কোর্সে যোগ দিতে বা ছেড়ে দিতে চান, সেজন্য একাধিক সুবিধা আছে। তিন বা চার বছরের স্নাতক স্তরে এবং এক বা দু'বছরের স্নাতকোত্তর কোর্স চলবে। কোর্সে যোগ দেওয়া বা ছেড়ে দেওয়ার একাধিক সুযোগ মিলবে। 'অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট'-এর মাধ্যমে ওই পড়ুয়াদের ক্রেডিট দেওয়া হবে। পাঁচ বছরের ইন্টিগ্রেটেড স্নাতক বা স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হবে। উঠে যাচ্ছে এম.ফিল।
বোর্ড পরীক্ষার গুরুত্ব কমানো হবে। পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমানোর জন্য দু'ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে - অবজেকটিভ (ছোটো প্রশ্ন) এবং ডেসক্রিপটিক (ব্যাখ্যামূলক)। বছরে দু'বার বোর্ড পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। বোর্ড পরীক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে হবে।
উঠে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এবং অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিকাল এডুকেশন (এআইসিটিই)। পরিবর্তে উচ্চ শিক্ষা কাউন্সিল (HECI) গঠন করা হচ্ছে।
২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষকতার ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা হবে - চার বছরের ইন্টিগ্রেটেড বি.এড ডিগ্রি। শিক্ষকদের জন্য একটি নয়া এবং বিস্তারিত 'ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর টিচার এডুকেশন' (এনসিএফটিই ২০২১) তৈরি করবে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সেই নয়া কাঠামো তৈরি করা হবে।
পড়ুয়াদের বিভিন্ন ভিত্তিতে রিপোর্ট কার্ড দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিটি বিষয়ের নম্বর দেওয়া তো থাকবেই, পড়ুয়াদের দক্ষতা-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরও উল্লেখ থাকবে।
একটি সাধারণ প্রবেশিকা পরীক্ষার (কমন অ্যাপটিটিউড) আয়োজন করবে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। পাশাপাশি বিজ্ঞান, কলা, ভাষা এবং ভোকেশনাল বিষয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সাধারণ পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতির জন্য বছরে কমপক্ষে দু'বার প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে।
কলা, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান শাখার মধ্যে কোনও বাঁধাধরা বিভাজন রাখা হয়নি। শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী একাধিক শাখার অধীনস্থ বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন। অর্থাৎ একইসঙ্গে কলা বিভাগের বিষয়ের পাশাপাশি বাণিজ্য ও বিজ্ঞান শাখার বিষয় নিয়েও পড়তে পারবেন। পাঠ্যসূচিতে ইচ্ছে মতো রাখা যাবে ক্রীড়া ও বৃত্তিমূলক বিষয়ও।
পঞ্চম মাতৃভাষা অথবা আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যাবতীয় পঠনপাঠন এই ভাষাতেই হবে বলে নতুন শিক্ষা নীতিতে জানিয়েছে কেন্দ্র। তবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সেই মাতৃভাষা পড়ানো হলে ভালো বলে জানানো হয়েছে।