ইউপিএ আমলেই শিক্ষানীতি সংশোধনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। শেষপর্যন্ত নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বিতীয় জমানায় ১৯৮৬ সালের শিক্ষানীতি সংশোধন করা হয়েছে। সেই নয়া শিক্ষানীতিকে স্বাগত জানালেন তিরুবন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। একইসঙ্গে একাধিক প্রশ্নচিহ্নও তুললেন।
আরও পড়ুন : অগস্টে কবে কবে কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকবে? দেখে নিন তালিকা
বৃহস্পতিবার একাধিক টুইটবার্তায় ইউপিএ-২ জমানায় মানবসম্পদ ও উন্নয়নের রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'মানবসম্পদ ও উন্নয়ন মন্ত্রকে আমার সময় থেকেই ১৯৮৬ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিকে সংশোধন করে একবিংশ শতাব্দীতে আনার পক্ষে তদ্বির করেছিলাম। আমি খুশি যে মোদী সরকার অবশেষে সেই সাহসটা দেখিয়েছে, যতই সেটা করতে ছ'বছর সময় লাগুক না কেন।' ২০১২ সালের ২ নভেম্বর মানবসম্পদ ও উন্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন থারুর।
আরও পড়ুন : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির আবেদন শুরু ১০ অগস্ট থেকে
অপর একটি টুইটবার্তায় কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কের ঘোষিত নয়া শিক্ষানীতির যতটা আমরা দেখেছি, তাকে স্বাগত জানানোর যথেষ্ট পরিসর আছে। আমরা কয়েকজন যে সুপারিশ করেছিলাম, তার অনেকগুলিই নেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’ তবে কী কারণে সেই শিক্ষানীতি আগে সংসদে পেশ করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ।
থারুরের বক্তব্য, উদ্যোগ ভালো হলেও মূল বিষয়টি হল সেগুলির প্রণয়ন। আর সেখানেই খামতি থেকে যায়। কীভাবে ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবের ফারাক হয়, তাও ব্যাখ্যা করেন থারুর। তিনি বলেন, 'যেমন শিক্ষায় জিডিপির ছ'শতাংশ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত প্রথম নেওয়া হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। প্রতিটি সরকার সেই লক্ষ্যমাত্রা নেয় এবং যা নিজের অর্থ মন্ত্রকের বিরুদ্ধে হয়ে যায়। গত ছ'বছরে শিক্ষাখাতে মোদী সরকারের বরাদ্দ ক্রমশ নিম্নমুখী হয়েছে, তাহলে তা কীভাবে ৬ শতাংশে পৌঁছাবে?'
আরও পড়ুন : CAT 2020- অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু ৫ অগস্ট থেকে
একইসঙ্গে ২০৩৫ সালের মধ্যে 'গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিয়ো' ৫০ শতাংশ করার যে লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র, তা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন থারুর। তিনি বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় ৫০ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্কুলে ১০০ শতাংশ গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিয়ো প্রশংসনীয়। কিন্তু আপনি যখন বুঝবেন যে এটা উচ্চশিক্ষায় এখন ২৫.৮ শতাংশ এবং নবম শ্রেণিতে ৬৮ শতাংশ, তখন আপনি ভাবেন যে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে প্যারিসে সরকারের প্রতিশ্রুতি থেকে এই লক্ষ্যগুলি কি বেশি বাস্তববাদী?’
আরও পড়ুন : চলতি শিক্ষাবর্ষে বন্ধ ১৭৯ প্রফেশনাল কলেজ, ৯ বছরে সর্বোচ্চ : AICTE
এছাড়াও গবেষণা ক্ষেত্রে কেন্দ্রের আরও 'বাস্তবমুখী এবং পূরণ করা সম্ভব' লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন থারুর। তাঁর বক্তব্য, ২০০৮ সালে গবেষণা এবং উদ্ভাবনী খাতে জিডিপির ০.৮৪ শতাংশ বরাদ্দ হত। ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ০.৬ শতাংশ। বিশেষত আপাতত ভারতে প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় ১৫ জন গবেষক আছেন। সেখানে চিনের সংখ্যাটা ১১১। সেই পরিস্থিতিতে কীভাবে শূন্যস্থান ভরাট হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ।
আরও পড়ুন : UPSC CMS 2020 পরীক্ষার অনলাইন আবেদন শুরু, ৫৫৯টি শূন্যপদে নিয়োগ
পাশাপাশি দেশে প্রশিক্ষিত ও উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের প্রবল আকাল রয়েছে বলে জানান থারুর। কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতিতে সেই বিষয়টি ফুটে উঠলেও তার সমাধান নিয়ে কোনও স্পষ্ট উত্তর মেলেনি বলে দাবি করেন কংগ্রেস সাংসদ। একইসঙ্গে নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থারুর বলেন, 'সার্বিকভাবে, আমার উদ্বেগ হল, নয়া শিক্ষানীতিতে কেন্দ্রীয়করণের জোরালো প্রবণতা, কম সম্ভাবনার সঙ্গে উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখা গিয়েছে এবং না বলা একটা কথা ফুটে উঠেছে যে অধিকাংশ বিষয় পূরণ করতে পারবে বেসরকারি ক্ষেত্র। যা (শিক্ষার) খরচ বাড়াবে এবং অনেক সুযোগ গরিবদের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে।'