এক দিকে চলছে চিনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে টানাপোড়েন। অন্যদিকে দেশের ম্যাপ বদল করে ভারতের তিনটি অংশ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ হল নেপালের সংসদে। লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পিয়াধুরা অঞ্চলগুলিকে খাতায় কলমে নেপালের অংশ করার জন্যই বিল এনেছে ওই দেশের সরকার।
এদিন আলোচনার জন্য বিল পেশ করেন নেপালের আইনমন্ত্রী। গত মাসেই এই প্রস্তাব পেশ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেটি পিছিয়ে যায়। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি বলেছিলেন যে তিনি সর্বদলীয় বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান।
পার্লামেন্টের দুই কক্ষে দুই তৃতীয়াংশ ভোট চাই এই প্রস্তাব পাশ হওয়ার জন্য। উচ্চকক্ষে পর্যাপ্ত সংখ্যা থাকলেও নিম্ন কক্ষে শাসক নেপাল কম্যুনিস্ট পার্টির বিরোধীদের সাহায্য লাগবে বিল পাশ করার জন্য। প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এই বিল সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে।
ভারত-চিন বর্ডারে লিপুলেখে ভারত ৮০ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা বানানোর পরেই বিবাদ শুরু হয়। গত মাসে এই রাস্তা উদ্বোধন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। নেপালের দাবি লিপুলেখ তাদের দেশের অংশ, যদিও সেই দাবি উড়িয়েছে ভারত। মঙ্গলবারে এই বিল নেপালি সংসদে পেশ হওয়া নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি ভারত। সূত্রের খবর যে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে ভারতের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করেছে নেপাল। তারপরেই এই বিল আনার সিদ্ধান্ত।
গত মাসে নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত ম্যাপ জনসমক্ষে আনার পর কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় ভারত। নয়াদিল্লি বলে এরকম কৃত্তিম ভাবে নিজেদের অঞ্চল বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা কোনও ভাবেই ভারত মেনে নেবে না।
সংসদে এদিন নেপালের বিদেশমন্ত্রী প্রদীপ গেয়ালি বলেন যে এই রাস্তা তাদের রাষ্ট্রের স্বার্বভৌমত্বকে ছোটো করছে। তিনি বলেন যে ১৮১৬-র চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ঠিক হয়েছে। নেপালের দাবি যে তাদের সীমান্ত শুরু হয় লিম্পিয়াধুরায়, যেটা কালী নদীর উত্সস্থল। মন্ত্রী বলেন যে ভারত ১৯৯৭ সালে স্বীকার করেছিল যে কালাপানি ও সুস্তার সীমান্ত নিয়ে সমস্যা এখনও মেটেনি। নেপালের বিদেশমন্ত্রী বলেন যে তাঁরা চান ভারতের সঙ্গে বসে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার।
সংসদে অন্য বিরোধী দলরাও ভারতের সঙ্গে আলোচনার ওপর জোর দেয়।যে সংশোধনী বিল পেশ করা হয়েছে, সেটায় কোনও বদল চাইলে সাংসদদের আগামী তিন দিনের মধ্যে বলতে হবে। তারপরে দুই কক্ষে এই বিলের ওপর ভোট হবে।