শিশির গুপ্ত
নিজেকে সর্বময় ব্যক্তিতে পরিণত করতে অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। তা নিয়ে শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরেই বিরোধের মুখে পড়েছিলেন। সেই লাগাতার চাপের মুখে রবিবার সকালে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তা মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে পাশও হয়ে গিয়েছে।
বৈঠকের পর রাজধানী কাঠমান্ডুতে ওলির মন্ত্রিসভার সদস্য বর্ষামান পান বলেন, ‘আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রপতিকে (বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী) সংসদ ভাঙার প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু নিজের দলের বিরোধী গোষ্ঠীর তরফ থেকে যে লাগাতার চাপ আসছিল, তার মুখে একেবারেই আচমকা সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দেন ওলি। তাতে রীতিমতো অবাক হয়েছে ওয়াকিবহল মহল।
প্রথম থেকেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল বা প্রচণ্ড এবং মাধব নেপালের নেতৃত্বাধীন শাসক দলের গোষ্ঠীর তরফে সেই বিতর্কিত অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছিল। গত মঙ্গলবার সেই অধ্যাদেশ জারি করে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র অধিকার নিজের হাতে নিয়েছিলেন ওলি। পরদিনই শাসক দলের স্ট্যান্ডিং কমিটি একটি প্রস্তাবনা পাশ করে ওলিকে সেই অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
কমিটির বৈঠকে সেই নির্দেশ মেনে নিলেও পরে আবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন ওলি। নিজের দলের অন্দরে যাঁরা বিরোধিতা করছিলেন, তাঁদের বোঝানোরও চেষ্টা করেছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। নিজেদের দূরত্ব ঘোচাতে প্রচণ্ডের বাড়িতে যান ওলি। যে সব রাজনৈতিক নথিতে তাঁর চূড়ান্ত সমালোচনা করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার শর্তে অধ্যাদেশ তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সূত্রের খবর, সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রচণ্ডকে একসঙ্গে কাজের প্রস্তাব দেন ওলি। কিন্তু তা নাকচ করে দেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন ওলি। সূত্রের খবর, প্রচণ্ড-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাম বাহাদুর তাপাকে ফোন করেন। সংসদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সাহায্য চান। তারইমধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবনে ‘শীতল নিবাস’-এ বিদ্যাদেবীর সঙ্গে বৈঠকও করেন ওলি। মধ্যরাত পার করে চলে সেই বৈঠক। ওলিকে সংসদ না ভাঙার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু সেই পথে হাঁটেননি ওলি।