প্রদীপ ছিবার ও হর্ষ শাহের লেখা ‘India Tomorrow: Conversations with the Next Generation of Political Leaders’- লেখা বইয়ে কংগ্রেস পার্টির ভবিষ্যত গতিপথ নিয়ে নিজেদের মতামত রেখেছেন রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দুইজনেই মনে করেন যে ভবিষ্যতে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য ছাড়া অন্যরাও দল চালাতে পারেন।
রাহুল বইয়ের জন্য সাক্ষাৎকারে বলেন যে তিনি মনে করেন না কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার দরকার আছে দলকে শক্তিশালী করার জন্য। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর দায়িত্ব ছেড়ে দেন রাহুল। অনেক অনুনয় বিনয় করলেও তিনি এখনও আবার দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। গত বছরেরে ৩ জুলাই দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। সেখানে রাহুল লিখেছিলেন অনেক সময় একাই তাঁকে লড়তে হয়েছিল বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে। দায় নেওয়ার একটা সংস্কৃতি তৈরী করার জন্যই তিনি সরে গিয়েছিলেন বলে জানান রাহুল।
তবে যেভাবে তাঁদের পরিবারকে পরিবারতন্ত্রের দন্য আক্রমণ করা হয়, সেটিকে প্রোপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দেন রাহুল। তাঁর কথায়, আরএসএস বিজেপিতেও পরিবারবাদ আছে, গান্ধীদের আক্রমণ করা হয় কংগ্রেস আদর্শের প্রতি তাদের একনিষ্ঠতার জন্য।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যেভাবে উত্তর প্রদেশে কাজ করছেন, সেই নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন রাহুল। তিনি মনে করেন আগামী বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের কাছে বড় সুযোগ আছে ওই রাজ্যে কামব্যাক করার।
কীভাবে তিনি চাইবেন যে মানুষ তাঁকে মনে রাখুক, সেখানে কংগ্রেস নেতা বলেন তিনি এসব নিয়ে চিন্তুত নন। এই মুহূর্তে মানুষের জন্য কী করতে পারছেন, সেটাই বেশি দরকারি, বলে জানান তিনি। রাহুল গান্ধী বলেন যে তিনি গেরুয়া শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছেন যারা তাঁকে দিনরাত আক্রমণ করছে। এর কারণ তাঁর থেকে যে বিপদ আছে, এটা জানে বিজেপি, বলে রাহুলের দাবি। তিনি রাজনীতি করতে তেমন ইচ্ছুক নয়, এগুলি সব বিজেপির প্রচার বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে কংগ্রেসের ভবিষ্যত নিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন যে ইস্তফা পত্রে হয়তো নয় কিন্তু অন্য জায়গায় রাহুল বলেছে যে গান্ধীদের আর কংগ্রেস চালানো উচিত নয়। তিনি এই কথার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত বলে জানান প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। প্রসঙ্গত কোনও অন্য নেতাকে কংগ্রেসের প্রধান বাছার চেষ্টা করেছিল দল, কিন্তু সহমত গঠন হয়নি। শেষ পর্যন্ত সনিয়া গান্ধীকেই কার্যনির্বাহী প্রধানের দায়িত্ব নিতে হয়।
এখন যখন ফের কংগ্রেস প্রধান নির্বাচনের কথাটি উঠছে ও অনেকেই জল্পনা করছেন যে রাহুল গান্ধী হয়তো ফের মসনদে বসবেন তখনই প্রকাশ্যে এল এই বই। এতে বোঝাই যাচ্ছে যে অন্তত এক বছর আগে নেতৃত্ব নিতে অনিচ্ছুক ছিলেন রাহুল। কিন্তু তারপর অনেক জল বয়ে গেছে। দলে ক্রমশই বাড়ছে অনৈক্য। সেই পরিস্থিতিতে গান্ধী পরিবারের সদস্যরা বিশেষত রাহুল এখনও আগের অবস্থানে অনড় কি না, সেটাই দেখার।