গ্র্যাজুইটি থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেসিক স্যালারি - নয়া শ্রমবিধির আওতায় বেতন কাঠামোর পরিবর্তন হবে। সেই বেতন কাঠামোর ফলে বেসিক স্যালারি, প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্র্যাজুইটির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন হবে, তা জেনে নিন।
বেসিক স্যালারি
সাধারণত পুরো বেতনের ৩৫-৪০ শতাংশ হল বেসিক স্যালারি। প্রভিডেন্ট ফান্ডে কত টাকা বরাদ্দ হবে, তা সেই বেসিক স্যালারির উপরেই নির্ভর করে। নিয়ম অনুযায়ী, বেসিক স্যালারির ১২ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট জমা পড়ে (কর্মীদের অংশ বা এমপ্লয়ার্স কন্ট্রিবিউশন)। বাকি ১২ শতাংশ দেয় সংশ্লিষ্ট সংস্থা (এমপ্লয়িজ কন্ট্রিবিউশন)। প্রভিডেন্ট ফান্ডে যাতে কম টাকা দিতে হয়, সেজন্যই বেসিক স্যালারি রাখতে চায় বিভিন্ন সংস্থা।
একাধিক মহলের দাবি, ২০১৯ সালের বেতন সংক্রান্ত শ্রমবিধিতে মোট বেতনের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ হতে পারে বেসিক স্যালারি। তবে সেই বিধিতে তেমন সন্তুষ্ট নয় বিভিন্ন সংস্থা। বহুজাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থা উইলিস টাওয়ার ওয়াটসনের সমীক্ষা অনুযায়ী, মাত্র ৩১ শতাংশ সংস্থা (যে সংস্থাগুলি সমীক্ষা অংশগ্রহণ করেছিল) জানিয়েছে যে বেসিক স্যালারি বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: এই IPO-তে মালামাল, ১০২ টাকার শেয়ার এক বছরেই ৭,২০০ টাকা!
বিষয়টি নিয়ে উইলিস টাওয়ার ওয়াটসনের ভারতীয় শাখার প্রধান ঋতব্রত সরকার জানিয়েছেন, নয়া শ্রমবিধির আওতায় সংস্থাগুলিকে গ্র্যাজুইটির মতো সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। শ্রমবিধি অনুযায়ী, মোট বেতনের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ গ্র্যাজুইটি হিসেবে প্রদান করতে হয়। সেক্ষেত্রে খাতায়কলমে বেসিক স্যালারি বাড়ানো হবে না। বেসিক স্যালারির সঙ্গে একাধিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত আছে।
প্রভিডেন্ট কন্ট্রিবিউশন
বেসিক পে'র ১২ শতাংশ হচ্ছে প্রভিডেন্ট ফান্ড (এমপ্লয়িজ কন্ট্রিবিউশন)। উদাহরণ স্বরূপ, যদি আপনার বেসিক স্যালারি ২৫,০০০ টাকা হয়, তাহলে এমপ্লয়িজ কন্ট্রিবিউশন বাবদ প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য ৩,০০০ টাকা কাটা হবে। সেইসঙ্গে ৩,০০০ টাকা দেবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
তবে অপর একটি প্রভিডেন্ট ফান্ডের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসে এমপ্লয়ার্স কন্ট্রিবিউশন ১,৮০০ টাকা (১৫,০০০ টাকার ১২ শতাংশ) বেঁধে রাখা যায়। অনেকেই সেই ১৫,০০০ টাকার নিয়ম অনুযায়ী চলে। নয়া শ্রমবিধিতে ১৫,০০০ টাকার নিয়মের কোনও হেরফের হয়নি। উইলিস টাওয়ার ওয়াটসনের সমীক্ষা অনুযায়ী, মাত্র ১৩ শতাংশ সংস্থা (যে সংস্থাগুলি সমীক্ষা অংশগ্রহণ করেছিল) জানিয়েছে যে নয়া শ্রমবিধির নিয়ম মেনে প্রভিডেন্ট ফান্ড দেওয়া হবে। বর্তমান নিয়ম মেনেই প্রভিডেন্ট ফান্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ৪৬ শতাংশ সংস্থা।
গ্র্যাজুইটি
১৯৭২ সালের গ্র্যাজুইটি আইন অনুযায়ী কর্মীদের গ্র্যাজুইটি প্রদান করা হয়। সেক্ষেত্রে আপনি শেষে ৫০,০০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন এবং কোনও একটি সংস্থার হয়ে পাঁচ বছর কাজ করেছেন, আপনার গ্র্যাজুইটি ঠেকবে ১.২৫ লাখ টাকা। সেইসঙ্গে গ্র্যাজুইটির ক্ষেত্রে ২০ লাখ টাকা ঊর্ধ্বসীমা কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন: Wipro CEO Salary: নয়া নজির উইপ্রোর, CEO-কে দেওয়া বেতন শুনলে চোখ উঠবে কপালে!
২০২০ সালের সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত বিধিতে পাঁচ বছরের ন্যূনতম সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা নির্দিষ্ট চুক্তির নিরিখে কম সময়ের জন্য কাজ করবেন, তাঁরাও গ্র্যাজুইটি পাবেন। বেসিক স্যালারির উপর ভিত্তি করে গ্র্যাজুইটির হিসাব করা হবে। যে বেসিক স্যালারি মূল বেতনের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ হবে। তার ফলে গ্র্যাজুইটি অনেকটা বেড়ে যাবে। উইলিস টাওয়ার ওয়াটসনের সমীক্ষা অনুযায়ী, ৪০ শতাংশ উত্তরদাতার ধারণা বাড়তি গ্র্যাজুইটির কারণে তাদের মুনাফার উপর অত্যন্ত প্রভাব পড়বে।