ভুল করে সাপের গায়ে পা। আর তার ফলে ছোবলে মৃত্যু। এ হেন ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কারও ঘরে ইচ্ছা করে সাপ ছেড়ে দিয়ে খুন! এমনটা কখনও শুনেছেন?
হ্যাঁ। এমন বেশ কিছু ঘটনা দেখা গিয়েছে সম্প্রতি। খুনের এই নয়া কৌশলে তাই চিন্তিত সুপ্রিম কোর্ট।
বিশেষত রাজস্থানে এমন বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনায় এমনটাই হয়েছে। এমনই এক মামলার বিচার চলছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা, বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির এজলাসে। তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছেন, সম্প্রতি দেশজুড়ে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। আর এটি যে বেশ উদ্বেগের বিষয়, তা বলাই বাহুল্য।
উদ্বেগের বিষয় কেন?
এর কারণ যাঁকে সাপে কামড়াচ্ছে, তিনি বুঝতে না পারলে অথবা প্রত্যক্ষদর্শী না থাকলে এটি সাধারণ দুর্ঘটনা বলেই ধরে নেবেন সকলে। ঘুমের মধ্যে বিছানায় সাপকে উত্ত্যক্ত করে ছেড়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। কখনও বা বন্ধ ঘরে রেখে আসা হচ্ছে বিষধর সাপ। এক্ষেত্রে এটি যে খুনের ঘটনা, তা বোঝার উপায় বা প্রমাণই থাকবে না।
শাশুড়ির ঘরে সাপ ছেড়ে দিয়ে খুন!
উল্লেখিত মামলা ২০১৯ সালের। রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলায় এক মহিলার বিরুদ্ধে তাঁর শাশুড়িকে সাপের কামড় খাইয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ। শাশুড়ি সুবোধ দেবী তাঁর পুত্রবধূ আল্পনার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক জেনে যান। এরপরেই প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
কিন্তু জলজ্যান্ত বিষধর সাপ কীভাবে পেলেন?
অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, আল্পনার প্রেমিক এক সাপুড়ের থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষধর সাপটি কেনেন। এরপর তা ছেড়ে দেওয়া হয় শাশুড়ির ঘরে। সাপের গায়ে অজান্তে পা দিয়ে ফেললে তার ছোবলে সুবোধ দেবীর মৃত্যু হয়।
কিন্তু বন্ধ ঘর। আশেপাশে জলা-জঙ্গল নেই। সেখানে এমন বিষধর সাপ কীভাবে প্রবেশ করল তাই নিয়ে সন্দেহ হয় পরিবারের সদস্যদের। এরপরেই খুনের মামলা দায়ের করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলায় আল্পনা ও তার প্রেমিক মণীশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই মামলাই এখন সুপ্রিম কোর্টে।
যদিও অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী আদিত্য চৌধুরীর দাবি, তাঁদের মক্কেলকে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁরা সাপ ছাড়েননি। ঘরে নিজে থেকেই সাপ এসেছিল।
তবে বিষয়টা এত সহজভাবে নিতে নারাজ আদালত। কারণ রাজস্থানে এহেন খুন এর আগেও হয়েছে। অন্যান্য রাজ্যেও এ জাতীয় অভিনব খুনের ঘটনা ধরা পড়েছে। অভিযুক্তদের জামিনের আর্জি খারিজ করা হয়েছে।