কেবলমাত্র হিন্দুদেরই মন্দির চত্বরে কাজ করা উচিত। তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি) বোর্ড-এর চেয়ারম্যান পদে যোগ দিয়েই একথা বললেন বি আর নাইডু। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে এই দাবি করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে নাইডু বলেন, 'যাঁরা তিরুমালায় চাকরি করবেন, তাঁদের সকলেরই হিন্দু হওয়া উচিত। আমার প্রথম প্রচেষ্টা সেটাই হবে। এই বিষয়টি নিয়ে অনেক ইস্যু তৈরি হচ্ছে। আমাদের এটা খতিয়ে দেখা উচিত।'
সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে, বোর্ডের নয়া চেয়ারম্যান এ নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি অন্যান্য ধর্মাবলম্বী কর্মীদের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
নাইডু আরও জানিয়েছেন, ভিন্ন ধর্মের ওই কর্মীদের জন্য যাতে ভিআরএসের ব্যবস্থা করে তাঁদের আগেভাগেই অবসর গ্রহণ করানো যায়। অথবা তাঁদের অন্য কোনও বিভাগের সরিয়ে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করবেন তিনি।
উল্লেখ্য, বুধবারই ২৪ সদস্যের নয়া টিটিডি বোর্ড গঠন করে অন্ধ্রপ্রদেশের টিডিপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। এই বোর্ড বিশ্বের সবথেকে ধনী মন্দির - তিরুমালা তিরুপতি পরিচালনার দায়িত্ব সামলাবে।
ভারত বায়োটেক ইন্টারন্য়াশনাল লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং এমডি সুচিত্রা ইলাকেও নয়া বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে।
বি আর নাইডু অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু এবং রাজ্যের এনডিএ সরকারের অন্য নেতানেত্রীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁকে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে বসানোর জন্য।
আর সেই পদে বসেই বি আর নাইডু অভিযোগ করেছেন, পূর্ববর্তী জগন্মোহন রেড্ডির সরকারের আমলে তিরুমালায় 'বহু অনিয়ম' ঘটেছে। তাই, তিনি মন্দিরের 'পবিত্রতা' রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় 'রক্ষাকবচ' নির্মাণের বার্তা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চন্দ্রবাবু নাইডু অভিযোগ করেন, জগন্মোহনের আমলে মন্দিরের লাড্ডু প্রসাদের পবিত্রতা নষ্ট করা হয়েছে। কারণ, সেই সময়ে মন্দিরের লাড্ডু তৈরি করতে যে ঘি ব্যবহার করা হত, তাতে পশুর চর্বি মেশানো হত বলে দাবি করেন চন্দ্রবাবু।
যার জেরে তুমুল আলোচনা ও জল্পনা শুরু হয়। সেই বিতর্ক গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাই করতে শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সেই বিশেষ তদন্তকারী দলে সিবিআই এবং অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের দু'জন করে আধিকারিক থাকবেন। এছাড়াও, সেই দলে রাখা হবে একজন এফএসএসআই আধিকারিককেও। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে, এই তদন্তকারী দলের তত্ত্বাবধানে থাকবেন সিবিআই ডিরেক্টর।
আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি। তাঁর বক্তব্য, এই তদন্তই চন্দ্রবাবুর মুখোশ খুলে দেবে। তিনি যে কেবলমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বহু মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে অস্ত্র করছেন, তা প্রমাণিত হয়ে যাবে।