পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নায় বিজয় ভুঁইয়াকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মোহন মণ্ডলকে পুণে থেকে গ্রেফতার করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত মোহন মণ্ডল গা–ঢাকা দিয়েছিল। ২০২৩ সালের মে মাসে বিজয় ভুঁইয়াকে অপহরণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় আগেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। কেন বিজেপি নেতা বিজয় ভুঁইয়াকে খুন করা হয়েছে? ধৃতকে জেরা করে জানতে চান এনআইএ অফিসাররা। অভিযুক্ত মোহন মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য বলে দাবি এনআইএ’র।
এদিকে এনআইএ’র তদন্তকারীরা নানা নেটওয়ার্ক দিয়ে এই মোহন মণ্ডলের নাগাল পেতে চাইছিলেন। সেই কাজও জোর তৎপরতার সঙ্গে চলছিল। আগে গ্রেফতার হওয়া দু’জন এই মোহন মণ্ডলের নাম নিয়েছিল। তারপর থেকেই জোর তদন্ত শুরু করে। এই কাজ করার সময় গোপন সূত্রে খবর আসে। আর সেই খবরের উপর ভিত্তি করে গতকাল রাতে মহারাষ্ট্রের পুণে যায় এনআইএ টিম। তারপর সেখান থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়েছে। ধৃত মোহন মণ্ডলের বিরুদ্ধে আগেই গ্রেফতারি পরোয়ানি জারি করা হয়েছিল। আজ, শনিবার মহারাষ্ট্রের আদালত থেকে ট্রানজিস্ট রিমান্ডে মোহন মণ্ডলকে বাংলায় নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলায় সন্ত্রাসের জাল কতটা বিস্তৃত হয়েছে? জেলে গিয়ে জঙ্গিদের জেরা করতে চান গোয়েন্দারা
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ১ মে ময়নার বাকচায় খুন হন বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয় ভুঁইয়া। এই ঘটনার পরই অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও পলাতক থাকে কয়েকজন। আগে সেপ্টেম্বর মাসে গোড়ামহলে অভিযান চালিয়ে ১০ জন তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়ি সিল করে দেয় এনআইএ। ২০২৩ সালে ময়নার বিজেপি নেতা বিজয় ভুঁইয়াকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছিল। বাকচার গোড়ামহল এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। পরিবারের দাবি ছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বই তাঁকে ষড়যন্ত্র করে খুন করে। এই ঘটনায় ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তার মধ্যে ৯ জন গ্রেফতার হয়। যদিও পরে জামিন পেয়ে যায় কয়েকজন।
এছাড়া কদিন আগে এনআইএ’র হাতে ধরা পড়েছিল দুই অভিযুক্ত। তাঁদের জেরা করেই অভিযুক্ত মোহন মণ্ডলের সম্পর্কে তথ্য জানতে পারেন গোয়েন্দারা। বাড়ির কাছেই বাকচা পঞ্চায়েত এলাকার বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কে অপহরণ করার পর গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর ওই নেতার দেহ জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিজয়ের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি ভুঁইয়া তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা, তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান সুখলাল মণ্ডল–সহ মোট ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ময়না থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তদন্তভার যায় এনআইএ’র হাতে। একবছর পর নবকুমার মণ্ডল নামে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এবার মোহন মণ্ডলকে গ্রেফতার করার পর অভিযুক্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১১।