কর্ণাটকের কারওয়ারের আইএনএস কদম্বা নৌঘাঁটি সম্পর্কে সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ফাঁস করার অভিযোগ উঠল ঠিকাদার সংস্থার দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করল এনআইএ। অভিযোগ উঠেছে, পাক গুপ্তচর সংস্থার এক মহিলা এজেন্টের কাছে ওই এলাকায় নৌগতিবিধির ছবি সহ গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন তারা। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, দুজনেই হানি ট্র্যাপের শিকার।
আরও পড়ুন: ১ লাখ কোটি টাকার চুক্তি প্রায় পাকা, ফ্রান্স থেকে ২৬ রাফাল ছাড়াও ভারতে আসবে…
ধৃতদের নাম হল আঙ্কোলার অক্ষয় নায়েক এবং কারওয়ারের ভেথান থান্ডেল। মঙ্গলবার আঙ্কোলা এবং কারওয়ার পুলিশের সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করে এনআইএ। জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদ থেকে দুজন ডেপুটি সুপারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এনআইএ’র দল গোপন তথ্য পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। কারওয়ারের পুলিশ সুপার নারায়ণ এম নিশ্চিত করেছেন, যে মঙ্গলবার সকালে কারওয়ার সিটি থানায় এনআইএ অফিসাররা পাঁচজন নৌ ঘাঁটির কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এরপর তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে নিয়ম অনুযায়ী, তাদের দুজনকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় এবং জেলা আদালতে পেশ করা হয়। দুজনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, “মদুজনেই অত্যন্ত সুরক্ষিত নিষিদ্ধ অঞ্চলের গোপন তথ্য শেয়ার করেছেন।
জানা যায়, পাক মহিলা এজেন্ট নিজেকে মেরিন অফিসার পরিচয় দিয়ে ২০২৩ সালে ওই দুজনের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। তিনি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বাস তৈরি করেন এবং সংবেদনশীল তথ্যের বিনিময়ে ৮ মাসের জন্য প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ । একজন এনআইএ আধিকারিক জানিয়েছেন যে, ওই পাক এজেন্ট নৌঘাঁটি সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিলেন, এর মধ্যে নির্মাণ প্রকল্প এবং জাহাজের চলাচল অন্তর্ভুক্ত ছিল। অভিযুক্ত দুজনে তাকে যুদ্ধজাহাজের আগমন এবং প্রস্থান সম্পর্কে ছবি এবং আপডেট পাঠাত বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, আইএনএস কদম্বা নৌঘাঁটি প্রজেক্ট সি-বার্ড নামেও পরিচিত। ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পদ। এটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নৌঘাঁটি। এখানে বিমানবাহী জাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং আইএনএস বিক্রান্ত সহ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রয়েছে। এনআইএর আধিকারিকরা সন্দেহ করছেন, যে গুপ্তচরবৃত্তির এই অভিযান পাকিস্তানের বৃহত্তর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টার অংশ হতে পারে। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, যে গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত দুই অভিযুক্তের আর্থিক লেনদেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছে। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা জানার চেষ্টা করছে এনআইএ। এছাড়াও কী ধরনের তথ্য পাঠানো হয়েছিল তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।