জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার একজন সদস্যকে পূর্ব আফ্রিকার রুয়ান্ডা থেকে পাকড়াও করে ভারতে আনা হল। যৌথভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।
বৃহস্পতিবার দুই তদন্তকারী সংস্থার তরফেই এই তথ্য সামনে আনা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ধৃত জঙ্গির নাম সলমন রহমান খান। তার বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুর সংশোধনাগারে মৌলবাদী ভাবধারা প্রচার এবং মৌলবাদীদের নিয়োগের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ রয়েছে।
এদিন সকালে এই ইস্যুতে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনআইএ। তাতে তাদের তরফে জানানো হয়েছে - 'বেঙ্গালুরু কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে সন্ত্রাসী মৌলবাদী ভাবধারার প্রচার এবং সন্ত্রাস চালানোর জন্য পরবর্তীতে মৌলবাদীদের নিয়োগ সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত সলমনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এনআইএ। এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেছে রুয়ান্ডা ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (আরআইবি), ইন্টারপোল এবং ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। ওই ব্যক্তিকে ২৭ নভেম্বর হেফাজতে নেওয়া হয় এবং আজ সকালে তাকে ভারতে নিয়ে আসা হয়।'
এনআইএ-র তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে মোট ১৭ জন অভিযুক্ত সন্ত্রাসবাদীকে, কোনও না কোনও গুরুতর মামলার প্রেক্ষিতে অন্য কোনও দেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসা হল।
অন্যদিকে, সিবিআই-এর পক্ষ থেকেও আলাদা একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, 'এনআইএ-র অনুরোধ অনুসারে গত ২ অগস্ট সিবিআই-এর পক্ষ থেকে ইন্টারপোল-এর মাধ্যমে সলমন খানের নামে একটি রেড নোটিশ জারি করা হয়। ওই ওয়ান্টেড অপরাধীকে শনাক্ত করতে সারা বিশ্বের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলিকে সেই অ্য়ালার্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়।...'
'...শেষমেশ রুয়ান্ডায় সলমন রহমান খানের হদিশ পাওয়া যায়। এরপরই সিবিআই-এর তরফ থেকে রুয়ান্ডার রাজধানী এবং সবথেকে বড় শহর কিগালিতে অবস্থিত ইন্টারপোল-এর ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর কাছে সলমন খানকে ধরার জন্য সাহায্য চাওয়া হয়।'
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বেঙ্গালুরু সংশোধনাগার মৌলবাদী ষড়যন্ত্রের মামলাটি রুজু করে একটি ফেডারেল সন্ত্রাসবিরোধী তদন্তকারী সংস্থা।
অভিযোগ ছিল, টি নাসির নামে এক লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি, যে যাবজ্জীবনের সাজা কাটার জন্য ওই সংশোধনাগারে বন্দি, সে-ই আবাসিকদের মধ্যে জঙ্গি প্রচার চালানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। আবাসিকরা যাতে জেল থেকে বেরোনোর পর ভারতের নানা প্রান্তে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালায়, তাদের সেই ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করত নাসির।
এই ঘটনায় বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশ একটি মামলা রুজু করেছিল। সেই সময়, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তারা সাতটি পিস্তল, চারটি হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি ম্যাগাজিন, ৪৫টি কার্তুজ এবং চারটি ওয়াকি-টকি উদ্ধার করেছিল। অভিযোগ ছিল, এসবের মাধ্যমেই হিংসা ও সন্ত্রাস ছড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
এনআইএ-র দাবি একটি পকসো মামলায় বেঙ্গালুরু কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি ছিল সলমন রহমান খানও। সেখানে সে নাসিরের সংস্পর্শ আসে। এবং পরে নাসিরের নির্দেশে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বিস্ফোরক ও অস্ত্র হামলাকারীদের মধ্যে বিতরণের দায়িত্ব নেয়।