নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৬ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। জানা গিয়েছে, ভুলবশত নাগরিকদের ওপর হামলা চালায় বাহিনী। এলাকার স্থানীয় আত্মরক্ষা বাহিনীকে অপরাধী দল বলে ভুল ভেবে এই হামলা চালানো হয়। তাতে আহত হয়েছেন আরো অনেক স্থানীয় বাসিন্দা। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই হামলার ফলে মৃত্যু সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এনিয়ে গত কয়েক মাসের মধ্যে দুবার এই ধরনের ঘটনা ঘটল নাইজেরিয়ায়।
আরও পড়ুন: ইরানে ইজরায়েলের হানার পর ‘আলোচনায় আসার’ বার্তা ভারতের, মুখ খুলল পাকিস্তানও
সাইদু ইব্রাহিম একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আত্মরক্ষা দলটি দস্যুদের তাড়া করে গ্রামে ফিরে যাচ্ছিল। দস্যুরা তাদের ওপর ডাঙ্গেবে এলাকায় আক্রমণ করেছিল। তারা যখন পালিয়ে তুঙ্গার কারা গ্রামের কাছে পৌঁছয়। সেই সময় যুদ্ধবিমান থেকে তাদের লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করা হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতীদল ডাঙ্গেবে হানা দিয়েছিল। তারা বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছিল, গবাদি পশু, চুরি লুটপাট চালাচ্ছিল। তাদের কাছ থেকে রেহাই পেতে ওই এলাকার মানুষজন আশেপাশের ১৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছিল। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ১৬টি মৃতদেহ এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। আরও মৃতদেহের অনুসন্ধান চলছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে। এই ঘটনায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছে, নিহতের সংখ্যা ২০ জন। এই মানবাধিকার সংস্থাটি এদিনের বিমান হামলার বিষয়ে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২৫ ডিসেম্বর প্রতিবেশী সোকোটো রাজ্যে জেহাদিদের বিরুদ্ধে এক অভিযানে দুটি গ্রামে বোমা বিস্ফোরণ করে সামরিক বাহিনী। তাতে অনেক প্রাণহানি হয়।নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিমে জেহাদি ও দস্যুদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে সামরিক বিমান হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে অতীতে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে একটি নাইজেরিয়ার সামরিক বিমান ভুলভাবে নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর-পশ্চিম কাদুনা রাজ্যে। সেখানকার তুদুন বিরিতে একটি মুসলিম ধর্মীয় সমাবেশ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল। তাতে, কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই ছিল মহিলা এবং শিশু।
এছাড়াও, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে একইভাবে একটি যুদ্ধবিমান ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে রান শহরে হামলা চালিয়েছিল যুদ্ধ বিমান। ৪০ হাজার লোকের বসবাস সংলগ্ন ওই এলাকায় বিমান হানায় কমপক্ষে ১১২ জন নিহত হয়েছিলেন।