গত কয়েকদিন ধরেই ভাষা নিয়ে সরগরম হয়ে রয়েছে দক্ষিণের রাজনীতি। জাতীয় শিক্ষানীতির তিন ভাষা নীতির তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। এবার হিন্দি বনাম তামিল যুদ্ধ নয়া মাত্রা নিয়েছে রাজ্য বাজেটের লোগো থেকে ভারতীয় মুদ্রার প্রতীক চিহ্ন ‘রুপি’ সরিয়ে দেওয়াকে ঘিরে। তার পরিবর্তে রাজ্যের ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে ভারতীয় মুদ্রার প্রতীক চিহ্ন হিসেবে তামিল লিপির প্রতীক (রু) ব্যবহার করা হয়েছে। ডিএমকে সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি এই পদক্ষেপকে ‘বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন: বাজেটে রুপির প্রতীক রাখল না তামিলনাড়ু, ব্যবহার তামিল চিহ্ন, নাটক কটাক্ষ বিজেপির
তিনি বলেন, ‘এই পদক্ষেপ বিপজ্জনক মানসিকতার ইঙ্গিত দেয়, যা ভারতীয় ঐক্যকে দুর্বল করে তোলে। এই মানসিকতা আঞ্চলিক গর্বের ভান করে বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাবকে উৎসাহিত করে।’ এটিকে আঞ্চলিক উগ্রতা বলেও কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন ডিএমকে আগে থেকে তাদের আপত্তি জানায়নি? সীতারামন জানান, ২০১০ সালে ভারতীয় মুদ্রার এই প্রতীককে গ্রহণ করেছিল ভারত সরকার। তৎকালীন ইউপিএ সরকারের আমলে এই প্রতীক তৈরি হয়েছিল। সেইসময় ডিএমকেও ছিল ইউপিএ জোটে। তখনই আপত্তি জানানো উচিত ছিল বলে জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
এছাড়াও, এই পদক্ষেপের জন্য ডিএমকে সরকারের বিরুদ্ধে এক তামিল যুবকের দেশের প্রতি অবদানকে অস্বীকার করার অভিযোগ তুলেছেন সীতারামন। তিনি আরও বলেন, সমস্ত নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্তৃপক্ষ জাতির সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য সংবিধানের অধীনে শপথ গ্রহণ করেছেন। রাজ্য বাজেটের লোগো থেকে ‘রুপি’-এর মতো জাতীয় প্রতীক অপসারণ করা সেই শপথের পরিপন্থী। জাতীয় ঐক্যের প্রতি অঙ্গীকারকেও দুর্বল করে দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ডিএমকে শুক্রবার রাজ্য বাজেটের লোগো থেকে ভারতীয় মুদ্রার প্রতীক সরিয়ে দেয়। এ নিয়ে রাজ্যের বিরোধীরা ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন। তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্য বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাই রাজ্যের শাসক দলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিজেপি নেতা তামিলিসাই সৌন্দরাজন এই পদক্ষেপকে ‘সংবিধানের পরিপন্থী’ বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি স্ট্যালিনকে তাঁর নাম পরিবর্তন করে তামিল অর্থে নামকরণের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। যদিও ডিএমকে দাবি করেছে যে ‘রু’ শব্দটির ব্যবহার শুধুমাত্র তামিল ভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং ভাষার প্রতি তাঁদের ভালোবাসা প্রকাশের জন্য করা হয়েছে।