আমজনতার টাকা লুট করে যে তথাকথিত শিল্পপতিরা বিদেশে চম্পট দিয়েছেন, তাঁদের অসংখ্য় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের খোয়া যাওয়া সম্পদের একটা অংশ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)। মঙ্গলবার এই তথ্য প্রকাশ করেছেন ভারত সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
তিনি জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে পুনরুদ্ধার করা সম্পত্তির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ২২,২৮০ কোটি টাকা। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন আর্থিক প্রতারণার শিকার নাগরিকদের খোয়া যাওয়া অর্থ ও তাঁদের সম্পদ ফিরিয়ে দিতে এবং আর্থিক প্রতারণার ঘটনা রুখতে যে বদ্ধপরিকর, এই তথ্যই তার প্রমাণ।
সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে লোকসভায় বিতর্ক চলাকালীন সীতারামন তাঁর ভাষণে জানান, গত কয়েক বছরে ইডি এই কাজের উপর বিশেষ জোর দিয়েছে। ফলত, যে কোটিপতিরা আমজনতার টাকা লুট করে পালিয়েছেন, বা অন্যায়ভাবে নিজেদের সম্পদ বাড়িয়েছেন, সেই বিপুল সম্পত্তি চিহ্নিত করে তা বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তারপর সেই সম্পদ হয় কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক অথবা সেই সম্পদের প্রকৃত মালিকদের ফেরানো হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, যাঁদের বেআইনি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেই তালিকায় বেশ কিছু পরিচিত নামও রয়েছে। যেমন - লিকার ব্যারন বিজয় মালিয়ার ১৪,১৩১.৬ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ফেরানো হয়েছে।
ঠিক একইভাবে পলাতক হীরক ব্যবসায়ী নীরব মোদীরও ১,০৫২.৫৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা সরাসরি ভুক্তভোগীদের এবং বিভিন্ন বেসরকারি ব্য়াঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্পর্কে নীরব মোদীর আত্মীয় মুকুল চোকসির বেআইনি সম্পত্তির মধ্যে ২,৫৬৫.৯০ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। শীঘ্রই সেই বিপুল পরিমাণ সম্পদ নিলামে তোলা হবে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ব্যক্তি বিশেষ নয়, বেশ কিছু আর্থিক প্রতারণার ঘটনাতেও অভিযুক্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। যেমন - ন্যাশনাল স্পট এক্সেচেঞ্জ লিমিটেড (এনএসইএল) আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে নেমে ১৭.৪৭ কোটি টাকার বেআইনি সম্পত্তি ইডি পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। সেই সম্পদ নিলাম করে যে টাকা পাওয়া যাবে, তা ওই প্রতারণা চক্রের প্রকৃত ভুক্তভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
এই প্রসঙ্গে সীতারামন বলেন, 'আর্থিক প্রতারণা প্রতিরোধী আইনের অধীনে ইডি সফলভাবে সব মিলিয়ে অন্তত ২২,২৮০ কোটি টাকার বেআইনি সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সমর্থ হয়েছে। বড় মামলাগুলি থেকে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আমরা আর পিছিয়ে নেই। এমনকী তাঁরা (প্রতারণায় অভিযুক্তরা) যদি দেশ ছেড়ে পালিয়েও যান, তাহলেও আমরা তাঁদের ছাড়ব না।'