বিরোধী শিবির থেকে প্রস্তাব এসেছে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার, কিন্তু বিজেপিতে কেউ বলবে না হতে, এভাবেই যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন মোদী সরকারের অন্যতম ব্যতিক্রমী মুখ নীতীন গডকড়ি। ব্যতিক্রমী কারণ তিনি ঠিক অন্য সতীর্থদের মত এক সুরে কথা বলেন না। মাঝে মাঝেই নিজের স্বকীয় চিন্তাভাবনার মাধ্যমে মিডিয়ার পাদপ্রদীপে আসেন এই প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি। তখনই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কী নিজের একটা আলাদা পরিচিতি তৈরি করতে চাইছেন, হয়ে উঠতে চাইছেন বিজেপিতে আরেক কক্ষ। তবে এবার নিজেই যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রী গডকড়ি বলেছেন, গেরুয়া শিবিরের কেউ তাঁকে ভবিষ্যতে শীর্ষ পদ নিতে বলবে না।
লন্ডনভিত্তিক সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে এনডিএ সরকারের মন্ত্রিসভার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিতর্কিত মন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্য ইকোনমিস্টের মতে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে উত্তেজনার গুজবের মধ্যে ২০২২ সালে গডকড়িকে বিজেপির সংসদীয় বোর্ড থেকে 'অপসারণ' করা হয়েছিল "। এখন তিনি মোদীর উত্তরসূরি হওয়ার শর্টলিস্টে আছেন। ইকোনমিস্টের মতে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকান প্রসিকিউটরদের অভিযোগের কারণে গডকড়ির সম্ভাবনা আরও উন্নত হতে পারে।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমাদের দলগুলোর মধ্যে এবং ভিন্ন ধরনের মতাদর্শের লোকদের মধ্যে একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেপ্টেম্বরে গডকড়ি বলেছিলেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হল রাজা তাঁর বিরুদ্ধে কড়া মতামতকে সহ্য করতে পারেন কিনা। এটি অনেকের মতে মোদীকেই ইঙ্গিত করে বলা।
বিদেশে অনেকই গডকড়িকে বিজেপির মধ্যপন্থী মুখ বলে জানেন। বিজনেস নেতাদের মধ্যে পরিকাঠামোর ওপর জোর দেওয়ার জন্য গডকড়িকে বাহবা দেন। কিছু বিরোধী নেতাও তাঁকে পছন্দ করেন, যা প্রয়োজনে জোট গঠনে সহায়তা করবে। এটা মাথায় রাখতেই হবে যে গডকড়ি নাগপুরের সাংসদ, যেটি আরএসএস-এর আঁতুড়ঘর। বর্তমানে বিভিন্ন সমীক্ষায় মোদীর পরেই জনপ্রিয়তা রয়েছে অমিত শাহ ও যোগী আদিত্যনাথের। গডকড়ি আসেন তাঁদের পরে। কিন্তু শেষ বিচারে জনমত নয়, দল ও আরএসএস ঠিক করবে পরের নেতা। সেখানে ঘরের ছেলেকে আরএসএস ব্যাক করবে না, এমন কেই বলতে পারে। তাই নীতীন গডকড়ি মুখে যাই বলুন না কেন, এত সহজে তাঁকে নিয়ে জল্পনা থামবে না, একথা হলফ করে বলা যায়।