২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোট গড়তে তৎপর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সম্প্রতি তিনি কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে যান। উত্তরপ্রদেশে গিয়েও তিনি সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আগে দিল্লিতে গিয়ে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন নীতীশ। তবে এবার এই সকল বিরোধী নেতাদের এক টেবিলে বসানোর জন্য উদ্যোগী হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার তিনি জানান, ১০ মে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচন শেষ হলেই পটনায় বিরোধী নেতাদের বৈঠকের আয়োজন করতে পারেন তিনি। সেই বৈঠকেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এর আগে আরজেডি প্রতিষ্ঠাতা লালু প্রসাদ যাদবের সঙ্গে কথা বলেন।
নীতীশ কুমার বলেন, '২০২৪ সালে বিজেপিকে হারাতে জোট গঠনের লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব। বর্তমানে কিছু নেতারা কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ব্যস্ত। সেটা শেষ হলেই আমরা এই বৈঠকের স্থান ও সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। যদি সবাই পটনাকে এই বৈঠকের ভেনু হিসেবে মেনে নেয়, তাহলে এখানেই হবে সেই বৈঠক। আমরা পটনায় এই বৈঠকের আয়োজন করতে পারলে খুশি হব।' সম্প্রতি তিনি দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে এই বৈঠকে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তেজস্বীকে নিয়েই নীতীশ দেখা করেন রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও। এরপর আম আদমি পার্টি প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করেন নীতীশ। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআই নেতা ডি রাজার সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয় নীতীশ-তেজস্বীর। অখিলেশ, মমতার সঙ্গেও বৈঠক করেন এই দুই নেতা। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোটের সলতে পাকানো শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মমতার মুখে বারংবার বিরোধী ঐক্যের কথা শোনা গেলেও সাম্প্রতিককালে কংগ্রেসের সঙ্গে অনেকটাই দূরত্ব বেড়েছে তৃণমূলের। গোয়া এবং মেঘালয়ে যেভাবে কংগ্রেস ভাঙিয়ে তৃণমূল নিজেদের দল ভারী করেছে, তাতে অসন্তুষ্ট হাত শিবির। এদিকে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সঙ্গে জোট গড়ে তৃণমূলের বিরোধিতা করে আসছে কংগ্রেস। এই আবহে কংগ্রেসকে কথায় কথায় তোপ দাগতে শোনা গিয়েছে মমতা, অভিষেককে। তবে ২০২৪ সালে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হটাতে যে কংগ্রেসের সঙ্গ প্রয়োজন, তা হয়ত মমতাও জানেন। এই আবহে নীতীশের আমন্ত্রণে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে তিনি এক টেবিলে বসবেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য বিষয়, মমতা নিজেই নীতীশকে সব বিরোধী দলের বৈঠক ডাকতে বলেছিলেন।