নতুন বছরের শুরুতেই ফের দলবদলের জল্পনা! আর সেই জল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে আবারও একবার দলবদলের জন্য বিশেষ পরিচিত নীতীশ কুমার।
কেন বলা হচ্ছে একথা? কারণ, ইংরেজি নববর্ষের আবহেই সম্প্রতি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব নীতীশের উদ্দেশে বলেছিলেন, তিনি নীতীশের জন্য দরজার খুলে রেখেছেন! নীতীশেরও উচিত দরজা খুলে দেওয়া। যাতে দুই পক্ষের মধ্যে যাতায়াত শুরু করা যায়!
তাহলে কি ফের একবার এনডিএ ছেড়ে INDIA-এর হাত ধরার কথা ভাবছেন নীতীশ? বৃহস্পতিবার এ নিয়েই প্রশ্ন করা হয় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে। জবাবে সেই অর্থে কোনও কথা না বলে স্রেফ হাসেন নীতীশ কুমার। আর তারপর থেকেই শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া! কেন নীতীশ কুমার এই প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়ে শুধু হাসলেন, শুরু হয়েছে তার বিচার ও বিশ্লেষণ। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে অন্তত তেমন গুরুত্ব দিতে চাইছেন না লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বী যাদব।
বৃহস্পতিবার বিহারের নয়া রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেন আরিফ মহম্মদ। রাজভবনে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নীতীশ কুমার। অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকরা যখন লালুপ্রসাদের প্রস্তাব নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন, একগাল হেসে তিনি শুধু বলেন, ‘কী যে বলেন...!’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত এক দশকের মধ্য়ে লালুর দল আরজেডি-র সঙ্গে দু'বার গাঁটছড়া বেঁধেছেন নীতীশ কুমার। ২০১৫ সালে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং একত্রে বিহারের সরকার গঠন করেছিলেন। সেই সম্পর্কে তিনি ইতি টানেন ২০১৭ সালে।
পরবর্তীতে, ২০২২ সালের অগস্ট মাসে মহাজোটের ছাতার তলায় ফের একত্রে আসে আরজেডি ও জেডিইউ। শেষমেশ, এই দুই দলই INDIA-এর শরিক হয়। কিন্তু, পরে ফের নীতীশ পাল্টি খান এবং আবার একবার এনডিএ-র সঙ্গে যোগ দেন! কাজেই নীতীশ কুমারের কাছে দলবদল করাটা খুবই নিয়মিত একটা বিষয়। কাজেই লালুর প্রস্তাবে তাঁর মুখ হাসিতে ভরে গেলে, তা নিয়ে জল্পনা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
গত সোমবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন লালুপ্রসাদ যাদব। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যদি নীতীশ কুমার ফের INDIA-এ ফেরেন, তাহলে কি তিনি তাঁকে গ্রহণ করবেন?
জবাবে লালুপ্রসাদ যাদব বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার যদি আমাদের পক্ষে আসেন, তাহলে আমরা অবশ্যই তাঁকে মেনে নেব। আমাদের দরজা সবসময়েই খোলা আছে। মুখ্যমন্ত্রীরও তাঁর দরজা খোলা রাখা উচিত। তাতে দুই পক্ষের লোকেদেরই যাতায়াত করতে সুবিধা হবে।'
এমনকী, লালু এও বলেন, নীতীশ একাধিকবার তাঁদের সঙ্গে জোট ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছেন। তবুও তাঁকে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। লালুর কথায়, 'আমি সবসময়েই ক্ষমা করে দিই। আমি এবারও ওঁকে ক্ষমা করে দেব। যদি তিনি আমাদের পক্ষে এসে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।'
তবে, লালু যা বলছেন, তার সঙ্গে একেবারেই সহমত নন তাঁর ছেলে তেজস্বী। তিনি আগেই বলেছিলেন, INDIA-এর দরজা নীতীশ কুমারের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এদিন তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তেজস্বী আবারও বলেন, 'আমি আগেই এই বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট করেছি। এখনও আমার বক্তব্য একই রয়েছে।'