শপথ তো নিলেন, তবে এবার সম্ভবত নীতিশ কুমারের কাছে 'কঠিন' সময় শুরু হল। সপ্তমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দিনে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন চারবারের সাংসদ তারকিশোর প্রসাদ এবং রেণু দেবী। যে দু'জনই বিজেপির পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।
২০১০ এবং ২০১৫ সালে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি পাটনার গান্ধী ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হলেও করোনাভাইরাসের কারণে এবার তা অনেকটাই সাদামাঠা হয়েছে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ রাজভবনে আসেন নীতিশ। কিছুক্ষণ পরই নীতিশকে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে দেন রাজ্যপাল ফাগু চৌহান। তবে টানা চারবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েও খুব একটা স্বস্তিতে থাকবেন না নীতিশ। কারণ নীতিশের পরেই শপথ নেন তারকিশোর এবং রেণু। নীতিশের পাশেই বসেছিলেন তাঁরা। যা বিহারের এনডিএ জোটের ভবিষ্যৎ সমীকরণের সবথেকে বড় প্রতীকী ছবি হয়ে থাকল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখে উন্নয়নের কথা বললেও বিহারে এখনও মূলত উচ্চবর্ণের দল হিসেবেই বিজেপি বিবেচিত হযত। সেক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষ এবং মহিলা ভোটারদের মধ্যে নীতিশের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানোর জন্য জেডিইউয়ের হাত ধরেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু এবার দুই পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে নীতিশের ডেপুটি করে এক ঢিলে দুই পাখি মারল বিজেপি। একদিকে তো পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মধ্যেও ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হল, অন্যদিকে চাপে রাখা যাবে নীতিশকে। যাঁর দল বিজেপির তুলনায় ৩১ টি আসন কম পেয়েছে। ফলে নীতিশের মুখ্যমন্ত্রিত্বের পরীক্ষা আদতে সোমবার পাটনা থেকেই শুরু হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
শপথগ্রহণের পর অবশ্য সাহসী মুখ তুলে ধরার চেষ্টা করেন নীতিশ। রাজভবনের বাইরে এনিডএ জোটের সাফল্য তুলে ধরেন। বলেন, 'মানুষের সিদ্ধান্তে রাজ্যে আবারও সরকার গঠন করেছে এনডিএ। আমরা একসঙ্গে কাজ করব এবং মানুষের সেবা করব।' তবে সুশীল মোদীকে কেন উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি, সেই প্রশ্নের উত্তর বিজেপির থেকেই জানার পরামর্শ দেন নীতিশ। তারইমধ্যে এলজেপির তরফে নীতিশের উদ্দেশে খোঁচা উড়ে এসেছে। যে দল বিহার নির্বাচনে নীতিশের দলকে কার্যত রাস্তায় নামিয়েছে, সেই দলের চিরাগ পাসোয়ান বলেন, 'আবারও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় নীতিশ কুমারকে অভিনন্দন। আমার আশা, সরকার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করবেন এবং আপনি এনডিএয়ের মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন।'
সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা-সহ বিজেপির প্রথম সারির একাধিক নেতার উপস্থিতিতে নয়া মন্ত্রিসভার ১৪ জন সদস্য শপথ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজন বিজেপির এবং পাঁচজন জেডিইউয়ের। এছাড়াও হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা এবং বিকাশশালী ইনসান পার্টির একজন করে সদস্য মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন।