ভারতের সেইসব মেধাবী পড়ুয়া, যাঁরা বিদেশের বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে যান, এবার তাঁদের সতর্ক করল 'ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন' (এনএমসি)।
তাদের পক্ষ থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিদেশের যেকোনও প্রাইভেট বা বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে দেখতে হবে, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আদৌ ২০২১ সালের 'ফরেন মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট লাইসেন্স' (এফএমজিএল) নীতি মেনে কাজ করছে কিনা।
এনএমসি-র বক্তব্য যদি ভারতীয় পড়ুয়ারা এই বিষয়টি খতিয়ে না দেখেই বিদেশের কোনও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন, তাহলে ভবিষ্যতে তাঁরা যে কোনও বড় সমস্য়ায় পড়তে পারেন।
এক্ষেত্রে এনএমসি-র তরফ থেকে অত্যন্ত জোর দিয়ে এবং একেবারে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা যে কোর্সে ভর্তি হচ্ছেন - তার সময়কাল, সংশ্লিষ্ট নির্দেশাবলীর ভাষা, পাঠক্রম বা পাঠ্যসূচি অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ - এসবই, এর মধ্যে কোনও একটি পরবর্তীকালে ভারতে এসে ডাক্তার হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে।
অর্থাৎ - সোজা কথায়, সংশ্লিষ্ট বিদেশি মেডিক্যাল কলেজটি যদি ২০২১ সালের নীতি মেনে না চলে, বা তা লঙ্ঘন করে, তাহলে সেখান থেকে ডাক্তারি পাস করলেও সেই ব্যক্তিকে ভারতে চিকিৎসক হিসাবে রেজিস্ট্রেশন নাও দেওয়া হতে পারে। এবং এমন ঘটনা ঘটলে তার দায় সম্পূর্ণভাবে সেই প্রার্থীর উপরেই পড়বে।
এনএমসি-র পর্যবেক্ষণ, এই বিষয়টি নিয়ে বারবার পড়ুয়াদের সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু, তারপরও কিছু ছাত্রছাত্রী আগুপিছু না ভেবেই বিদেশে বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে ভর্তি হয়ে যাচ্ছেন। অথচ, সেইসব মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠনের মান মোটেও ভালো নয়। এবং সেই মানকে স্বীকৃতি দেওয়াও সম্ভব নয়।
তথ্য বলছে, এইসব বিদেশি প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজগুলি এমন সব প্রশিক্ষণ পদ্ধতি অবলম্বন করে, বা যে পাঠ্যসূচি মেনে চলে, সেগুলি এনএমসি-র নির্দেশিকা অনুসারে সঠিক নয়। ফলত, সেইসব কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করা পড়ুয়াদের পরবর্তীতে ভারতে অ্য়ালোপ্যাথি প্র্যাকটিস করার ছাড়পত্র দেওয়া হয় না।
২০২১ সালের এফএমজিএল নীতি অনুসারে, যা ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে, তাতে অত্যন্ত কঠোরভাবে কিছু নির্দেশ মেনে চলার কথা বলা হয়েছে।
যেমন - বিদেশের কোনও কলেজ থেকে মেডিক্যাল বা ডাক্তারি পড়লে সেই কোর্সের নির্ধারিত সময়সীমা থাকতে হবে, নির্দেশাবলীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাষার ব্যবহার থাকতে হবে, পাঠ্যসূচি এবং বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাজনিত প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে হতে হবে।
যদি এই সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে-অক্ষরে পালন করা হয়, একমাত্র তবেই বিদেশ থেকে ডাক্তারি পাশ করে আসা ভারতীয়দের এদেশে অ্য়ালোপ্যাথি প্র্যাকটিস করার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
তাই বিদেশের কোনও প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে ভারতীয় পড়ুয়াদের সেই কলেজ, এবং তার পঠনপাঠনের প্রক্রিয়া, নিয়ম-কানুন প্রভৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়ার উপর জোর দিয়েছে এনএমসি।