সুপ্রিম কোর্টের কাছে কোনও মামলাই খুব ছোটো নয়। বরং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা সংক্রান্ত মামলায় সেভাবে হস্তক্ষেপ না করলে 'ন্যায়বিচার গুরুতরভাবে ব্যর্থতার' মুখে পড়বে। এমনই মন্তব্য করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি এমন সময় সেই মন্তব্য করেছেন, যখন শীর্ষ আদালতে জামিনের আর্জি ও 'তুচ্ছ' জনস্বার্থ মামলা না শোনার পক্ষে সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ চুরির দায়ে উত্তরপ্রদেশের ব্যক্তি ইক্রামকে দু'বছরের কারাদণ্ডের সাজা সংক্রান্ত একটি মামলায় শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টের কাছে কোনও মামলাই খুব ছোটো নয় এবং কোনও মামলা খুব বড় নয়। কারণ আমাদের বিবেকের ডাক এবং আমাদের নাগরিকদের স্বাধীনতার আর্তনাদে সাড়া দিতে হয়। সেজন্য আমরা এখানে আছি। এটা কোনও একটি নির্দিষ্ট মামলার বিষয় নয়। যদি আমরা ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়ে পদক্ষেপ না করি এবং পরিত্রাণ প্রদান না করি, তাহলে আমরা এখানে কী করছি? '
কী বলেছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু?
গত বুধবার রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী জানান, মামলার বোঝা এড়াতে শুধুমাত্র সাংবিধানিক বিষয় সংক্রান্ত মামলা শোনা উচিত সুপ্রিম কোর্টের। জামিনের আর্জি বা জনস্বার্থ মামলা এড়িয়ে যাওয়া উচিত বলে সওয়াল করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। সেইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম প্রথার পরিবর্তে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশনের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। যা অসংবিধানিক বলে ২০১৫ সালে খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী আরও দাবি করেন, আদালতে যে দীর্ঘদিন ছুটি থাকে, তা বিচারপ্রার্থীদের পক্ষে সমস্যার। তিনি বলেন, 'ভারতের মানুষের মধ্যে একটা অনুভূতি আছে যে আদালতে যে দীর্ঘদিন ছুটি চলে, তা বিচারপ্রার্থীদের জন্য খুব একটা সুবিধাজনক নয়।'
আরও পড়ুন: Kiren Rijiju: 'এটা বলবেন না যে সরকার কলেজিয়ামের ফাইলের ওপর বসে আছে..', রিজিজুর মন্তব্যে তোলপাড়
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে গ্রীষ্মকালীন ছুটির জন্য অবসরকালীন বেঞ্চ থাকে। কিন্তু শীতকালীন ছুটির সময় সেরকম কোনও বিশেষ বেঞ্চ নেই। এবারও শীতকালীন ছুটির সময় সুপ্রিম কোর্টে কোনও অবসরকালীন বেঞ্চ থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে নয়া বছরের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে শীতকালীন ছুটি চলবে।