আরও একবার মুখ পুড়ল জেএনইউ কর্তৃপক্ষের। সার্ভার রুমে অক্ষত বায়োমেট্রিক সিস্টেম ও সিসিটিভি ক্যামেরা মিথ্যা প্রমাণ করল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগ।
গত ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার সময় ছাত্ররা সার্ভার রুমে ভাঙচুর চালিয়ে ওই সমস্ত যন্ত্রপাতি নষ্ট করে বলে অভিযোগ করেছিল জেএনইউ কর্তপক্ষ। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য জানার অধিকার আইনে আসল ঘটনা জানতে আবেদন জানান ন্যাশনাল ক্যাম্পেন ফর পিপলস রাইট টু ইনফর্মেশন (NCPRI) সংগঠনের সদস্য সৌরভ দাস।
সেই আবেদনের ভিত্তিতে জমা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই দিন জেএইউ-এর সেন্টার ফর ইনফর্মেশন সিস্টেমে (সিআইএস) প্রধান সার্ভার বন্ধ রাখা হয়েছিল এবং তার পরের দিনও তা বন্ধ ছিল ‘বিদ্যুত্ সংযোগে সমস্যা দেখা দেওয়ায়’।
রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে যে, গত ৫ জানুয়ারি দুপুর ৩টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর তথা প্রধান ফটকে বসানো সিসি ক্যামেরায় থেকে কোনও অবিরাম ও সম্পূর্ণ ফুটেজ উদ্ধার করা যায়নি। উল্লেখ্য, ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জোর করে লোহার রড ও ভারী হাতুড়ি দিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের পেটায় মুখোশধারী দুষকৃতীর দল।
ঘটনার জেরে দায়ের করা এফআইআর-এ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, মুখোশধারী একদল ছাত্র সিআইএস-এ ঢুকে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তার জেরেই সার্ভার অচল হয়ে সিসিটিভি-সহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ইন্টারনেট পরিষেবা ও বায়োমেট্রিক হাজিরা প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
সাম্প্রতিক রিপোর্টে স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, ‘জেএনইউ-এর প্রধান সার্ভার বিদ্যুত্ সংযোগে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ৩ জানুয়ারি থেকে বন্ধ রাখা হয় এবং তার পরের দিনও তা অকেজো থাকে। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়নি।’
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ৪ জানুয়ারি দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে থাকা ১৭টি অপ্টিক্যাল ফাইবার নষ্ট হয়। তবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘একটিও’ বায়োমেট্রিক হাজিরা প্রক্রিয়া নষ্ট বা ভাঙা হয়নি।
এ ছাড়া তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভির প্রধান সার্ভার সিআইএস-এ অবস্থিত কি না। তার জবাবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভির প্রধান সার্ভার সিআইএস নয়, তথ্য কেন্দ্রে অবস্থিত।
গত ৯ জানুয়ারি তাঁর প্রশ্নগুলির জবাব সংবলিত রিপোর্টটি পেয়েছেন সৌরভ দাস। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিলেও কখনও বন্ধ রাখা হয় না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সার্ভার। গদুরুত্বপূর্ণ বলেই তা বিকল্প ব্যবস্থার সাহায্যে ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার নিয়ম।