কোনও বিবাহিতা মহিলা পরপুরুষের সঙ্গে অশ্লীল কথোপকথন মজে থাকলে তা কোনও স্বামীই সহ্য করতে পারে না। এ বিষয়ে স্বামীর আপত্তি জানানোর অধিকার আছে। আবার উলটো দিকে একজন স্বামীর ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য। এমনই পর্যবেক্ষণ মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের। একটি বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় এই পর্যবেক্ষণ করে মহিলার আবেদন খারিজ করেছে উচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন: দাম্পত্য কলহ থামাতে গিয়ে আবার আক্রান্ত পুলিশ অফিসার এবং কনস্টেবল, গ্রেফতার যুবক
মামলার বয়ান অনুযায়ী, পারিবারিক আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল। এই মামলায় বিবাহ বিচ্ছেদ মঞ্জুর করেছিল ফ্যামিলি কোর্ট। পরে সেই মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। বিচারপতি বিবেক রুশিয়া এবং বিচারপতি গজেন্দ্র সিংয়ের বেঞ্চে মামলা ওঠে। আদালত লক্ষ্য করেছে, মহিলা তাঁর পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে তাঁর যৌন জীবন নিয়ে কথা বলতেন। তারপরেই এমন পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের।
বেঞ্চ বলেছে, ‘কোনও স্বামীই স্ত্রীর এই ধরনের কার্যকলাপ মেনে নিতে পারবেন না। স্ত্রী যদি পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে অশ্লীল কথোপকথনে লিপ্ত হয়, তাহলে তা একজন স্বামী সহ্য করতে পারে না।’ আদালত আরও বলেছে, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই মোবাইলে চ্যাট বা অন্যান্য মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন করার স্বাধীনতা রয়েছে। তবে কথোপকথন যেন অশ্লীল না হয়। বিশেষ করে যখন সেই কথোপকথন বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে হয়। কারণ সেটা তাঁর জীবনসঙ্গীর কাছে আপত্তিকর হতে পারে।’
আদালত আরও জোর দিয়ে বলেছে, যদি একজন স্বামী বা স্ত্রী একে অন্যের আপত্তি সত্ত্বেও এই ধরনের কার্যকলাপ চালিয়ে যান, তাহলে তা নিঃসন্দেহে মানসিক নিষ্ঠুরতার সমান হবে। মামলার বয়ান অনুযায়ী, স্বামীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে মহিলা তাঁর পুরনো প্রেমিকদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে হোয়াটসঅ্যাপে তাঁদের অশ্লীল কথোপকথন হত।
তবে, মহিলা এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, যে তাঁর এমন কোনও সম্পর্ক ছিল না। তিনি আরও দাবি করেন যে তাঁর স্বামী তাঁর মোবাইল ফোন হ্যাক করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ তৈরি করার জন্য তাঁর স্বামীই এইসব কথা লিখে অন্যজনকে পাঠিয়েছিলেন। মহিলা আরও অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্বামীর কর্মকাণ্ড তাঁর গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করেছে। এমনকী স্বামীর বিরুদ্ধে ২৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবিরও অভিযোগ তুলেছেন মহিলা।
তবে, আদালত ওই ব্যক্তির অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে। মহিলার বাবাও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তাঁর মেয়ে তার পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতেন। এরপর মহিলার আবেদন খারিজ করে বিবাহ বিচ্ছেদের নির্দেশ বহাল রাখে হাইকোর্ট।