উৎপল পরাশর
২০২৬ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ একেবারে নির্মূল করে দেওয়া হবে অসমে। জানিয়ে দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সোমবার তিনি একথা জানিয়েছেন। কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দের প্রশ্নের উত্তরে অসমের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রতি মাসে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যাতে এটি একেবারে নির্মূল হয়। তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে অসমে।
অসমের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্য়ে অসম থেকে বাল্য বিবাহের অবসান হবে। এটা নিশ্চিত করার জন্য় আমরা কঠোরতম ব্যবস্থা নিচ্ছি। এবছরের বাজেটে আমরা ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এই বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। ভালো আইনজীবী রাখা, সচেতনা বৃদ্ধি করা, হেল্প লাইনের ব্যবস্থা করা সহ নানা ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন,বাজেটে যে বরাদ্দ করা হয়েছে তা বাল্য বিবাহের যে নাবালিকা বা নাবালিকারা রয়েছে তাদের পুনর্বাসনে কাজেও ব্যবহার করা হবে। আমাদের ডেডলাইনের মধ্য়ে যাতে এই বাল্য বিবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে যায় তার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
এদিকে পকসো আইনকে কীভাবে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায় তা নিয়ে হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, ১৬ বছরের নীচে যে কন্য়াদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অসমের মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৬ বছরের নীচে মেয়েদের সঙ্গে যদি যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোরতম ব্যবস্থা নেবে। তবে ওই বয়সের কোনও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হয়েছে কি না সেটা প্রমাণ করা কঠিন। কিন্তু যদি সেই নাবালিকা গর্ভবতী হয়ে পড়েন তবে এটা প্রমাণ করা যাবে যে অপরাধটা সংগঠিত হয়েছিল।
১৬ বছরের নীচে কারোর বিয়ে হলে কীভাবে পকসো ধারা প্রয়োগ করে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার নজিরও তুলে ধরেন তিনি। এদিকে সম্প্রতি চাইল্ড ম্যারেজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে অত্যন্ত আশার কথা শুনিয়েছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, গত এক মাসে একটিও চাইল্ড ম্যারেজ হয়নি অসমে। কার্যত একেবারে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য।
সূত্রের খবর, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অসম সরকার নাবালিকা বিবাহ রুখতে একেবারে আদা জল খেয়ে ময়দানে নামে। গোটা রাজ্যজুড়ে শুরু হয় অভিযান। অন্তত ৪০০০ মামলা করা হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত এই ঘটনায় ৩,১৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
অসমের মুখ্য়মন্ত্রী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিলেন, গত এক মাসে অসমে একটিও চাইল্ড ম্যারেজ হয়নি। এটা একটা বড় প্রাপ্তি। সামাজিক এই অপরাধের বিরুদ্ধে যে কঠোর অভিযান তাকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলেই। তিনি জানিয়েছে যতজনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল তার মধ্যে ৯০০ জন জামিন পেয়েছেন।