উপযুক্ত কারণ না থাকলে কারও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা যায় না। সম্প্রতি একটি মামলার প্রেক্ষিতে এমনই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউল ও বিচারপতি এম এম সুন্দ্রেশ জানান, ‘কাউকে বছরের পর বছর ধরে জেলের মধ্যে বন্দি রাখা যায় না। জামিন দেওয়াটাও আইনের মধ্যে পড়ে। জেলে রাখা ব্যতিক্রমী বিষয় হওয়া উচিত। কোনও উপযুক্ত কারণ না থাকলে কারোর ব্যক্তি স্বাধীনতা এভাবে খর্ব করা উচিত নয়।’ সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে অনেকক্ষেত্রেই বন্দিদের জামিনের বিরোধিতা করে জেলে ফেলে রাখা হচ্ছে। অনেক অভিযুক্ত বা আসামিই আছেন, যারা ১৪ বছরেরও বেশি জেলে বন্দি আছেন, কিন্তু জামিন পাননি। এই মামলার প্রেক্ষিতে পর্যবেক্ষণ দিতে গিয়ে শীর্ষ আদালত জানায়, ইলাহাবাদ হাই কোর্টে এমন অনেক মামলা পড়ে রয়েছে যেখানে ৮০’ সাল থেকে জামিনের আবেদন জানানো হচ্ছে। কিন্তু জামিন দেওয়া হয় নি। উত্তরপ্রদেশের সহকারী অ্যাডভোকেড জেনারেল গরিমা প্রসাদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি জানান, সরকার কী চায় না যে মানুষ জামিনে ছাড়া পাক। সব ক্ষেত্রে তো এভাবে জামিনের বিরোধিতা করা যায় না।
শীর্ষ আদালতের তরফে স্পষ্টত সরকারের তরফে আইনজীবীকে জানানো হয়, ‘আপনাদের রাজ্য তো খুব আয়তনে বড়। এই ধরনের সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান হয়, সেই বিষয়টি দেখা দরকার। এমন কোনও অবস্থা সৃষ্টি করবেন না যাতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বা আইন সচিবকে ডেকে পাঠাতে হয়।’ একইসঙ্গে আদালতের পরামর্শ, কোন কোন মামলার ক্ষেত্রে জামিনের বিরোধিতা করা হবে আর কোন কোন মামলার ক্ষেত্রে বিরোধিতা করা হবে না, সেবিষয়টি সরকার সঠিকভাবে বাছাই করুক। যার বিরুদ্ধে বোমা বিস্ফোরণ মামলা রয়েছে বা সন্ত্রাসবাদী হামলার মামলা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে জামিনের বিরোধিতা করা যেতেই পারে। কিন্তু প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রেই জামিনের বিরোধিতা করা যায় না।