গোরু পাচারকারীদের দখলে থাকা গবাদি পশু পুলিশ আটক করলে এবং পশু আশ্রয়স্থলে রাখলে তা মৌলিক অধিকার ভঙ্গের আওতায় পড়ে না এবং তার দাবিও জানানো যায় না। সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া অ্যাফিড্যাভিটে এই মন্তব্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
২০১৭ সালের ২৩ মে নির্ধারিত পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা দমন শর্তাবলীকে [Prevention of Cruelty to Animals (Care and Maintenance of Case Property Animals)] চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মৌলিক অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করেছে বাফেলো ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। ওই আইনে অবৈধ উপায়ে পাচার করা গবাদি পশু হেফাজতে নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং সেই সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেগুলি গোশালা বা পশু আশ্রয় শিবিরে রাখার বিধানও রয়েছে।
গত সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, এই শর্তাবলী ১৯৬০ সালে পাশ হওয়া পশুর উপর হওয়া নিষ্ঠুরতা দমন আইনের ২৯ নম্বর ধারার পরিপন্থী। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে, একমাত্র দোষী সাব্যস্ত হলেই পশুর মালিকানা বাজেয়াপ্ত হতে পারে।
তবে ২০১৭ সালে নির্ধারিত শর্তাবলীর ৩ নম্বর শর্তে অবৈধ পশু পাচার মামলায় বিচারককে অভিযোগের আওতাধীন পশু বাজেয়াপ্ত করা এবং পশুশালা, পশু উন্নয়ন সংগঠন বা গোশালায় রাখার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই বলবৎ করার বিধানও দেওয়া হয়েছে নয়া শর্তে।
বাফেলো ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের জবাবে সোমবার একটি অ্যাফিড্যাভিট জমা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়, ওই আবেদন ভ্রান্ত ধারণার ভিত্তিতে করা হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে পশুদের ‘হেফাজতে রাখা’, যা অস্থায়ী ব্যবস্থা। সেখানে পশুদের ‘বাজেয়াপ্ত’ করার কথা বলা হয়নি, যার অর্থ মালিকানা অবলুপ্ত হওয়া।
আবেদনে বলা হয়েছে, ‘আইন নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া সমাজবিরোধীদের কারণে পশু পরিবহণকারী, পশু ব্যবসায়ী এবং পশুপালকরা আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদের সংগ্রহে থাকা গবাদি পশু লুঠ করা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনায় সমাজের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেরুকরণ করা হচ্ছে। এগুলি অবিলম্বে এবং যথাযথ পদক্ষেপে বন্ধ করা না গেলে দেশের সমাজ ব্যবস্থার উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।’
কেন্দ্রের অ্যাফিড্যাভিটের জবাব দিতে আবেদনকারী সংস্থা এবং পশু অধিকার আন্দোলনকারীদের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।