মাওবাদী দমনে পুরো ভারতেই কি পশ্চিমবঙ্গের মডেল চালু করা হবে? লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায়ের সেই প্রশ্ন শুনে হাসি থামাতে পারলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হাসতে-হাসতেই শাহ যে জবাব দিলেন, তাতে হাসির রোল উঠল সংসদে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয়, দেশের কোনও রাজ্যই চাইবে না যে সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মডেল চালু করা হোক।’
'মাওবাদী সমস্যার সমাধান করেছেন মমতা'
মাওবাদী দমনে পশ্চিমবঙ্গ যে 'সাফল্য' অর্জন করেছে, তা মঙ্গলবার লোকসভায় তুলে ধরেন সৌগত। তিনি দাবি করেন যে আগে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের নিয়ে সমস্যা ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই বামপন্থী উগ্রপন্থার সমস্যা ১০-১৫ বছর ধরে তিন-চারটি প্রান্তে হচ্ছে। সবথেকে বেশি হচ্ছে ছত্তিশগড়ে। তারপর হচ্ছে মহারাষ্ট্র গাচ্চিরৌলিতে। তারপর হচ্ছে ওড়িশার কোরাপুটে। আর অন্ধ্রপ্রদেশের কয়েকটি অংশে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: Bangladesh Protest: কেমন আছে ওপার বাংলা? ‘৩৬ জুলাই’-এর পরদিন ফোনে HT বাংলা শুনল সাধারণের কণ্ঠস্বর
দমদমের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘এখনও প্রতি সপ্তাহে দেখি যে সুরক্ষাবাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের এনকাউন্টার হয়েছে। এখনও এনকাউন্টার বন্ধ হয়নি। আপনার নজরে যাতে বিষয়টা আসে, সেজন্য বলতে চাই যে পশ্চিমবঙ্গেও বামপন্থী উগ্রবাদের উত্থান হয়েছিল। কিন্তু এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার উন্নয়নের যে কাজ করেছেন, আদিবাসী যুবক-যুবতীদের যে চাকরি দিয়েছেন, (তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে)।’
‘স্রেফ একজন কিষেণজিকে মারতে হয়েছিল’
সৌগতের সেই কথা শুনেই হো-হো করে হাসতে থাকেন বিজেপি সাংসদরা। তাতে কিছুটা বিরক্ত হন সৌগত। তবে থামেননি তিনি। তৃণমূল সাংসদ বলতে থাকেন, ‘ওখানে স্রেফ একজন কিষেণজিকে মারতে হয়েছিল। এখন পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী উগ্রপন্থা শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই যে উনি কি পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ বিশ্লেষণ করে দেখবেন? আর ওই মডেলটাই ছত্তিশগড়-সহ অন্যান্য জায়গায় কার্যকর করবেন?’
‘মোদী সরকারের কোনও আপত্তি নেই, তবে….’
আর সেই প্রশ্ন শুনে হাসতে থাকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। তিনি বলেন, ‘কোনও রাজ্য যদি ভালো কাজ করে, তাহলে সেই রাজ্যের মডেলকে পুরো দেশে চালু করার ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কোনও সমস্যা নেই। তবে আমার মনে হয়, দেশের কোনও রাজ্যই চাইবে না যে পশ্চিমবঙ্গের মডেল সেখানে চালু করা হোক।’ আর সেই মন্তব্য শুনে হাসির রোল ওঠে সংসদের নিম্নকক্ষে।