অনেক চেষ্টা করেছিলেন। প্রায় রোজ নিয়ম করে বলছিলেন যে তিনি কতগুলি যুদ্ধ থামিয়েছেন (যদিও অনেকে তা মেনে নেয়নি)। তাও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে মুখ তুলে তাকাল না নোবেল কমিটি। বরং এবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন ভেনেজুয়েলার মারিনা কোরিনা মাচাদো। যে দেশ আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের খুব একটা নেকনজরে নেই বলেই মনে করে সংশ্লিষ্ট মহল। নোবেল কমিটির তরফে বলা হয়েছে, ‘ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রচারে অক্লান্ত পরিশ্রম এবং একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তর অর্জনের সংগ্রামের জন্য মারিনা কোরিনা মাচাদোকে ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ট্রাম্পের হৃদয় ভেঙে খানখান হয়ে গেল
অথচ শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপকের ঘোষণার শুরুটা যেভাবে করেন নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারপার্সন জার্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস, তাতে অনেকে ভেবেছিলেন যে এই বুঝি ট্রাম্পের নামটা ঘোষণা করা হল। নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে একজন সাহসী এবং শান্তির রক্ষক…..।’ কিন্তু তারপর ‘মহিলা’ বলতেই ট্রাম্পের স্বপ্ন ভেঙে যায়।
আরও পড়ুন: ভারতের ওপর থেকে শুল্কের বোঝা সরানোর দাবিতে ট্রাম্পকে চিঠি ১৯ মার্কিন আইনপ্রণেতার
নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপক মারিনা আদতে কে?
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি দ্বারা প্রদত্ত এই পুরস্কারের জন্য এই বছর ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল, যার মধ্যে ২৪৪ জন ব্যক্তি এবং ৯৪টি সংস্থা অন্তর্ভুক্ত। কমিটি এবার ভেনেজুয়েলার মারিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। কে এই নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মারিয়া? মারিয়া কোরিনা মাচাদো ভেনেজুয়েলার বাসিন্দা এবং একজন বিরোধী নেত্রী। তিনি ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীও ছিলেন। তিনি একজন গণতান্ত্রিক অধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন: নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা খাটো করেও ট্রাম্পের মুখে 'ভারত-পাক'
মারিনাকে সেলাম নোবেল কমিটির
তাঁকে সম্মান জানাতে গিয়ে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘তাঁকে (মারিয়া) এমন একটি রাজনৈতিক বিরোধী শিবিরে এক প্রধান, ঐক্যবদ্ধকারী ব্যক্তিত্ব হওয়ার জন্য প্রশংসা করা হয়েছে, যা একসময় বিভক্ত ছিল - এমন এক বিরোধী পক্ষ, যা স্বাধীন নির্বাচন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারের দাবি করেছে।’
আরও পড়ুন: গাজা নিয়ে ট্রাম্পকে ‘ক্রেডিট’ দিলেন মোদী! পাকিস্তানের উপরে খেপে গেলেন ডোনাল্ড?
মাচাদো ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের একজন প্রমুখ ব্যক্তিত্ব। তিনি কয়েক দশক ধরে দমনমূলক শাসনের বিরোধিতা করেছেন। সেজন্য তাঁকে বহুবার হুমকি দেওয়া হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে এবং রাজনৈতিকভাবে হয়রানিও করা হয়েছে। এত কিছু সহ্য করার পরেও মাচাদো ভেনেজুয়েলা ছাড়েননি এবং গণতন্ত্রের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর প্রতিবাদ চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর এক ডাকে ভেনেজুয়েলায় লাখ-লাখ মানুষের ভিড় জমে যেত।