চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ইরানের নোবেলজয়ী নার্গিস মহম্মদি। তাঁর কারাগারের মেয়াদ স্থগিত করার পর এভিন জেল থেকে তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এই মুক্তি স্থায়ী নয়, চিকিৎসার জন্য তাঁকে মাত্র তিন সপ্তাহের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর অভিযোগে মহম্মদিকে তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: নোবেল শান্তি পুরস্কার নার্গিস মহম্মদির, মানবাধিকার নিয়ে লড়াইয়ের জন্য এই সম্মান
নার্গিসের আইনজীবী মুস্তফা নিলি জানিয়েছেন, টিউমারের অস্ত্রপোচারের পর তাঁকে প্রতি তিন মাস পর পর পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও তিন সপ্তাহ সময় পর্যাপ্ত বলেই দাবি করেছেন নার্গিসের সমর্থকরা। তিন সপ্তাহের মুক্তির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা অন্তত তিন মাস নার্গিসকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন নার্গিস। ইরানের মৃত্যুদণ্ড প্রথা এবং হিজাবের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য ইরান সরকার তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে ৩১ বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫৪টি বেত্রাঘাত করা হয়েছিল। এরইমধ্যে নারীদের স্বাধীনতা এবং তাদের অধিকার নিয়ে আওয়াজ তোলার জন্য নার্গিসকে ২০২৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি জেলবন্দি থাকায় পরিবারের সদস্যরা তাঁর নোবেল পুরস্কারের জন্য নরওয়ের রাজধানী অসলোতে গিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, নার্গিস ১৯৯০ সাল থেকে নারী অধিকারের জন্য আওয়াজ তুলে আসছেন।২০০৩ সালে তিনি তেহরানের ডিফেন্ডারস অফ হিউম্যান রাইটস সেন্টারে কাজ শুরু করেন। নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইট অনুসারে, নারগিস মহাম্মদিকে ২০১১ সালে কারাগারে আটক কর্মী এবং তাদের পরিবারকে সাহায্য করার চেষ্টা করার জন্য প্রথম কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
গত বছরের জুনে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নার্গিস বলেছিলেন, যে তিনি ৮ বছর ধরে তাঁর সন্তানদের দেখেননি। উল্লেখ্য, নার্গিসের দুই মেয়ে তাঁর স্বামী তাগি রহমানির সঙ্গে ফ্রান্সে থাকেন। আসলে, তাগিও একজন রাজনৈতিক কর্মী। তাঁকে ইরান সরকার ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। তাগি রহমানি প্যারিসে সাংবাদিকদের বলেন, যে নার্গিস মুক্তির পরে ‘নারী জীবনের স্বাধীনতা’ স্লোগান দিয়েছিলেন।