বিবাহিত মহিলাদের প্রতি শ্বশুরবাড়িতে যে কোনও রকম নিগ্রহ ও নিষ্ঠুরতাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারার আওতায় পড়ে না। মঙ্গলবার এই রায় দিল বম্বে হাইকোর্ট।
এই সংক্রান্ত অভিযোগের এক মামলায় এ দিন মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলারর মালশিরাসের নিম্ন আদালতের রায়ে পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান খারিজ করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি এ এম বদর।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় বিবাহিত কোনও মহিলা শ্বশুরবাড়িতে নিষ্ঠুরতার শিকার হলে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরালয়ের আত্মীয়দের শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর আচরণের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, এমন কোনও আক্রমণাত্মক আচরণ যা ওই বিবাহিত মহিলাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয় অথবা তাঁর দেহে অথবা মনে মারাত্মক আঘাত সৃষ্টি করে।
শুধু তাই নয়, এই আচরণের আওতায় পড়ে মূল্যবান সম্পত্তি বা সামগ্রীর জন্য বধূ বা তাঁর কোনও আত্মীয়কে চাপ দেওয়ার মতো ঘটনাও। শ্বশুরবাড়ির দাবি অনুযায়ী এই সব মূল্যবান সম্পত্তি বা সামগ্রী জোগাড় করতে অপারগ হলে বধূ বা তাঁর আত্মীয়দের প্রতি হেনস্থাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আদালতে অভিহিত হয়।
বিতচারপতি বদর জানিয়েছেন, নিষ্ঠুরতার সংজ্ঞায় এমন আচরণই পড়ে যা নির্দিষ্ট মাত্রা ও সহ্যসীমা অতিক্রম করে। এই কারণে, বধূর বিরুদ্ধে শে্বশুরবাড়িতে যে কোনও আচরণই নিষ্ঠুরতা হিসেবে গ্রাহ্য করা যায় না বলে জানায় আদালত। নেতিবাচক আচরণের মাত্রা যদি বধূর স্বাভাবিক মানসিক গঠনে বিক্রিয়া ঘটায়, তবেই তা সাস্তিযোগ্য হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি বদর।
এই যুক্তিতেই গত ২০১৭ সালের মার্চ মাসে নিম্ন আদালতের রায়ে জনৈক অবিনাশ দেশমুখ ও তাঁর পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। আদালতের যুক্তি, তাঁদের বিরুদ্ধে অবিনাশের প্রাক্তন স্ত্রীয়ের অভিযোগ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারার আওতায় পড়ে না।
উল্লেখ্য, এই মামলায় অভিযুক্ত অবিনাশের বিরুদ্ধে তাঁকে লাথি ও ঘুষি মারার অভিযোগ এনেছিলেন ওই বধূ। মামলায় অভিযুক্ত পঞ্চম ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, বধূকে ভালো রান্না করতে না পার জন্য তিরস্কার করার।