শুধু আদানি গোষ্ঠী নয়, বিদ্যুৎ নিয়ে অন্য সংস্থারও পুরো টাকা মেটায়নি বাংলাদেশ। আর বকেয়ার অঙ্কটা কয়েক লাখ বা কয়েক কোটি টাকা নয়, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থার কাছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ধারের অঙ্কটা ৩৮,০০০ কোটি টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রায়)। যতদিন যাচ্ছে, তত সেই ধার মেটানোর জন্য মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপরে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত গ্রীষ্ম এগিয়ে আসায় দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কম ছিল। কিন্তু এবার চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। সামনেই রমজান মাস। সেচের মরশুম শুরু হবে। সবমিলিয়ে বিদ্যুতের জেরে বাংলাদেশ সরকারের ঘাম ঝরলে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
আদানির চিঠি, টাকা মেটানোর দাবি অন্য সংস্থারও
ওই সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিনদশেক আগে আদানি গ্রুপের চিঠি এসেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে বকেয়া টাকা মেটাতে বলেছে ভারতীয় সংস্থা। অন্যদিকে বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দাবি করা হয়েছে যে তাদের বকেয়ার অঙ্কটা ১০,০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। বারবার সেই ধার মেটানোর আর্জি জানানো হলেও তেমন কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দাবি করা হয়েছে।
৩৮,০০০ কোটি টাকা ধার, মন্ত্রক দিয়েছে ১,০০০ কোটি!
সেই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে পদক্ষেপ করেছে, তাতে কোনও লাভ হবে না বলে মনে সংশ্লিষ্ট মহল। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেখানে ৩৮,০০০ কোটি টাকা ধার আছে, সেখানে অর্থ মন্ত্রকের তরফে দিনকয়েক আগে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ১,০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। যা নগণ্য বললেও কম বলা হবে।
বিষয়টি নিয়ে ওই সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানিয়েছেন, সোমবার ১,০০০ কোটি টাকা এসেছে। কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ বকেয়া আছে এবং ঋণ শোধ করতে হবে, সেটার নিরিখে ওই অর্থটা একেবারে সামান্য।
গরমের সময় লোডশেডিংয়ে নাভিঃশ্বাস উঠবে?
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গরমের সময় বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৮,০০০ মেগাওয়াটে পৌছে যেতে পারে। বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির টাকা না মেটালে সেগুলি কতটা পরিষেবা দেবে, তা নিয়ে ধন্দ আছে। পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে জ্বালানি সংস্থাগুলির পাওনা না মেটানোর ব্যাপারটা। ওই সংস্থাগুলির কাছে প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকা বকেয়া আছে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, যদি বকেয়া মেটানো না যায়, তাহলে গরমের সময় বাংলাদেশে বিদ্যুতের সংকট দেখা দিতে পারে। গতবারের থেকেও পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে বাংলাদেশের বহু অংশে লোডশেডিং হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।