পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েনের অনুরোধ করেছিলেন। আর তার জবাবে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেছেন, তিনি তাদের ভূমিকা পুরোপুরি বোঝেন কিনা সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ পিটিআইকে বলেছেন যে সরকার নিজেরাই অনুরোধ করা ছাড়া রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষীদের খুব কমই কোনও দেশের ভিতরে পাঠানো হয়।
সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হওয়ার আহ্বান জানান।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশের অবস্থান সম্পর্কে বিদেশমন্ত্রীকে সংসদকে অবহিত করারও দাবি জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। খবর হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় বলেছিলেন, 'প্রয়োজনে সেখানকার সরকারের সঙ্গে কথা বলে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানো হোক, যাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করা যায়।
এই দাবি সম্পর্কে থারুর বলেন, আমি নিশ্চিত নই যে তিনি রাষ্ট্র- সংঘের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা পুরোপুরি বোঝেন কিনা। বহু বছর ধরে রাষ্ট্রসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করার সুবাদে আমি বলতে পারি, কোনো দেশের অনুরোধ ছাড়া রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী খুব কমই কোনো দেশের ভেতরে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, যখন কোনও দেশ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে, শান্তিরক্ষী পাঠানো হয় তখনই এবং তাও দেশের সরকারকে তাদের অনুরোধ করতে হয় তবে আমি সম্পূর্ণরূপে একমত যে কী ঘটছে তার দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।
পাশাপাশি, বিদেশের মাটি থেকে নির্যাতিত ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং ইসকনের প্রাক্তন প্রভূ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে।
তবে মঙ্গলবারও চিন্ময়কৃষ্ণ দাস কোনও স্বস্তি পাননি কারণ তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবী না থাকায় আদালতে তাঁর জামিনের শুনানি স্থগিত করা হয়েছিল। তার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি।
এদিকে ঢাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বানে বিস্ময় প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী দেশটির মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বাংলাদেশের ডি-ফ্যাক্টো পররাষ্ট্রমন্ত্রী তৌহিদ হোসেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, 'আমি জানি না, আমি বুঝতে পারছি না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন এ ধরনের বক্তব্য করেছেন। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, আমি বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে গিয়েছি।
তবে সমস্যার সমাধান হতে পারে বলেও জানান হোসেন। পারস্পরিক স্বার্থ অবশ্যই রক্ষা করতে হবে এবং বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়।
প্রতিবেশী দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হৈচৈ ভারতজুড়ে প্রতিবাদের পাশাপাশি হিন্দু ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দাবিতে এবং চিন্ময় দাসের জেল থেকে মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনও ইতিমধ্য়েই প্রতিবাদের রাস্তায় নেমেছে।