ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে হল অপেক্ষার অবসান। খুলে গেল প্যারিসের অন্যতম ল্যান্ডমার্ক, ৮৫০ বছরের প্রাচীন নোতরে-দাম গির্জা! ঐতিহাসিক সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প, ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স উইলিয়াম, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কি এবং স্পেসএক্স ও টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক।
আর এই আন্তর্জাতিক অতিথিদের অভ্যর্থনা জানালেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং তাঁর স্ত্রী - ফার্স্ট লেডি ব্রিজিট ম্যাক্রোঁ।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সকলের সামনে এই গির্জার মূল ফটক খুলে দেন প্যারিসের আর্চ বিশপ লরেন্ট উলরিচ। প্রথা মেনে গির্জার দরজায় টোকা মেরে দরজা খোলেন তিনি। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ১৫০ জন হাইপ্রোফাইল অভ্যাগত।
তাঁদের সকলের সামনে প্রথা মাফিক সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনের পর পোপ ফ্রান্সিস তাঁর বার্তা দেন। তারপর অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য অতিথিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী ফার্স্ট লেডি ড. জিল বাইডেন। ফ্রান্সের প্রাক্তন দুই প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কয়েজ হল্যান্দে এবং নিকোলাস সারকোজি।
এই প্রসঙ্গে বিবিসি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেই অনুসারে - ফরাসী প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তৃতায় বার্তা দেন, সবকিছুই ভঙ্গুর। তাই আমাদের নম্র হতে হবে এবং আমাদের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। আমাদের এই শিক্ষা যত্ন করে শেখা উচিত।
ওই একই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শতাব্দী প্রাচীন এই গির্জাটিকে সংস্কার করতে ২,০০০-এরও বেশি দক্ষ শিল্পী ও কারিগরকে কাজে লাগানো হয়েছিল। এবং এই কাজে খরচ করতে হয়েছে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো!
ফরাসী প্রেসিডেন্ট এই ঘটনাকে 'ফ্রান্সের স্থায়ী চেতনার প্রমাণ' বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই সংস্কারকার্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং একে 'মানবতার জয়' বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মতে, এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল, কীভাবে সম্পদের রক্ষা করতে হয় এবং তা কতটা জরুরি।
তবে, শুধুমাত্র ভিভিআইপি অতিথিরাই নন, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে গির্জার বাইরে হাজির হয়েছিলেন হাজার সাধারণ মানুষ। তাঁদের যাতে অনুষ্ঠানের প্রত্যেকটি ক্ষণ দেখতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য একটি বিরাট পর্দা (জায়ান্ট স্ক্রিন) লাগানো হয়েছিল। সেই পর্দায় অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল। পাশাপাশি, গোটা চত্বর জুড়ে কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছিল।
সূত্রের দাবি, ব্রিটিশ সরকারের অনুরোধে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রিন্স উইলিয়াম। তাঁকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে দেখা যায়।