ভারতের 'ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথোরিটি' (এনপিপিএ)-এর পক্ষ থেকে আটটি ওষুধের ১১ ধরনের 'ফর্মুলেশন' বা গঠনগত প্রক্রিয়ার দাম বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার লোকসভায় একথা জানিয়েছেন রাসায়ানিক ও সার মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল। মন্ত্রীর দাবি, বাজারে যাতে সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলির জোগান অব্যাহত রাখা যায়, সেই কারণেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
ওষুধের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রসের সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব)। সেই প্রশ্নের লিখিত জবাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে এনপিপিএ-র কাছে মোট ৭৭টি 'ফর্মুলেশন'-এর দাম বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল।
মন্ত্রীর লিখিত জবাবে জানানো হয়েছে, ওই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির যুক্তি ছিল, বর্তমান বাজারদরে সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলি আর সরবরাহ বা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, ওই ওষুধগুলি তৈরির খরচ সামগ্রিকভাবে বেড়েছে।
এক্ষেত্রে দাবি করা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলির তৈরি করার জন্য যে সক্রিয় ঔষধি উপাদানগুলি (অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস বা এপিআইএস) ব্যবহার করা হয়, তার দাম বেড়েছে। এছাড়াও, মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে দামের হার পরিবর্তিত হয়েছে। পাশাপাশি, কিছু নির্দিষ্ট ফর্মুলেশন বন্ধ করারও নির্দেশ এসেছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির দাবি ছিল, এইসব নানা কারণেই সবদিক খতিয়ে দেখে এনপিপিএ-র তরফে আটটি ওষুধের মোট ১১টি ফর্মুলেশনের দাম বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়।
সরকার পক্ষের বক্তব্য হল, আমজনতার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কারণ, ওই ফর্মুলেশনগুলির দাম না বাড়ানো হলে বাজারে সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলির জোগানই বন্ধ হয়ে যেত। সেক্ষেত্রে আমজনতাকে বাধ্য হয়েই একই ধরনের ওষুধ অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হত।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আগে থাকতেই এমন খবর প্রকাশ্যে এসেছিল যে অন্তত আটটি এমন ওষুধের দাম বাড়ানো হচ্ছে, যেগুলি হাঁপানি, গ্লুকোমা, থ্যালাসেমিয়া, যক্ষা এবং বিভিন্ন ধরনের মানসিক ব্যধি নিরাময় করতে ব্যবহার করা হয়।
এই পদক্ষেপের ফলে যে ওষুধগুলির দাম বাড়ছে, সেই তালিকায় রয়েছে - বেনজিল পেনিসিলিন ১০ লাখ আইইউ ইনজেকশন, অ্যাট্রোপাইন ইনজেকশন ০৬.এমজি/এমএল, স্ট্রেপটোমাইসিন পাওডার (যা ৭৫০ এমজি এবং ১০০০ এমজি ইনজেকশনের জন্য ব্যবহৃত হয়), স্যালবুটামল ট্যাবলেট ২ এমজি এবং ৪ এমজি ও রেসপিরেটর সলিউশন ৫ এমজি/এমএল, পিলোকারপাইন ২% ড্রপস, সেফাড্রক্সিল ট্যাবলেট ৫০০ এমজি, ডেসফেরিঅক্সামাইন ৫০০ এমজি (ইনজেকশনের জন্য) এবং লিথিয়াম ট্যাবলেট ৩০০ এমজি।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই ওষুধগুলির অধিকাংশই কম দামি। সাধারণত, সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায় অত্যন্ত জটিল পরস্থিতিতে এই ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয়।
সরকার পক্ষের বক্তব্য হল, এই ওষুধগুলির দামবৃদ্ধির ফলে আমজনতার কোনও সমস্যা হবে না। কারণ, এই ওষুধগুলির অধিকাংশই বিনামূল্যে বিভিন্ন সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিতরণ করা হয়।