ডিসেম্বরের শেষের দিকে বা জানুয়ারির গোড়ার দিকে চিনে যেতে পারেন অজিত ডোভাল। নাম গোপন রাখার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে অবহিত কয়েকজন আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংঘাত সমাধানের জন্য যে আলোচনা চলছে, সেটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেজিংয়ে যেতে পারেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। আপাতত দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। তবে সেই দিনটা চলতি বছরের শেষের দিকে হবে অথবা একেবারে নয়া বছরের শুরুর দিকে হবে। আর সেইসময় ডোভাল চিনে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
ডোভালের হাইপ্রোফাইল বৈঠকের পরিকল্পনা
বিশেষ প্রতিনিধিদের গোষ্ঠীর বৈঠকে যোগ দিতেই ডোভালের সেই চিন সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিশেষ প্রতিনিধিদের যে গোষ্ঠী সীমান্ত সংঘাত সমাধানের জন্য আলোচনা চালাচ্ছে, তাতে যেমন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আছেন, তেমনই আছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে শেষবার দু'জনের সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেইসময় পূর্ব লাদাখ সীমান্তের ডেমচক এবং ডেপস্যাং থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছিল ভারত এবং চিন। শেষপর্যন্ত ২১ অক্টোবর সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
২০০৩ সালেই তৈরি হয়েছিল সেই আলোচনার মঞ্চ
তবে সীমান্ত সমস্যা মিটিয়ে ফেলার জন্য বিশেষ প্রতিনিধিদের আলোচনার মঞ্চটা নতুন নয়, অনেক আগেই তৈরি হয়েছিল। ২০০৩ সালে সেই মঞ্চের পথচলা শুরু হয়েছিল। তারপর থেকে ২২ দফায় বৈঠক হয়েছে। শেষবার বৈঠক হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০২০ সালের এপ্রিল-মে থেকে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে শুরু হওয়া সামরিক সংঘাত মেটাতে বিশেষ প্রতিনিধিরা একাধিকবার বৈঠক করেছিলেন।
সেই মঞ্চ সক্রিয় করার বিষয়ে একমত হন মোদী ও জিনপিং
তারইমধ্যে ২৩ অক্টোবরে কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের মধ্যেই সেই মঞ্চ নতুন করে 'সক্রিয়' করে তোলার পক্ষে একমত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, যাতে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা যায়। আরও মজবুত করা যায় ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। আর সেই রেশ ধরেই ডোভাল চিনে যেতে পারেন বলে একটি মহলের তরফে দাবি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Jaishankar on India-China Ties: কোন ৩ নীতি মেনে চিনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ভারত? জানালেন জয়শংকর
আর সেই বিষয়টি যেদিন সামনে এল, তার দু'দিন আগে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর জানান, ডেপস্যাঙের প্রতিটি প্যাট্রোলিং পয়েন্টে টহল দেবে ভারতীয় সেনা। এমনকী ডেপস্যাঙের সবথেকে পূর্বে অবস্থিত যে প্যাট্রোলিং পয়েন্টে ভারত ঐতিহাসিকভাবে টহল দিয়ে এসেছে, সেখানেও যাবেন জওয়ানরা। চিনের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে জয়শংকর বলেন, 'এই সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত চুক্তিতে এমন বিধান আছে, যেখানে দুই পক্ষকেই নিজেদেরকে সংযত করে রাখবে।'