বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী আমজাদ আইয়ুব মির্জা পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইল খানের লাক্কি মারওয়াতের একটি ইউরেনিয়াম খনি থেকে ১৬ জন পরমাণু ইঞ্জিনিয়ারকে অপহরণের খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মির্জা অভিযোগ করেন, বৃহত্তর পরিকল্পনায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জড়িত রয়েছে এমন সন্দেহ থাকায় এই ঘটনা অভ্যন্তরীণ কাজ হতে পারে।
মির্জার মতে, প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সাইট থেকে ইউরেনিয়াম চুরি করেছে’, তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে পরিস্থিতি আরও জটিল। ইরানে ইউরেনিয়াম চোরাচালানের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর একাংশ এই চুরিতে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মির্জা প্রশ্ন তোলেন, ‘নিরাপত্তা কর্মী বা সামরিক বাহিনীর প্রতিরোধ ছাড়া টিটিপি কীভাবে একটি সুরক্ষিত ইউরেনিয়াম খনির অঞ্চল লঙ্ঘন করতে পারে?’ তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় কোনো গুলি চলেনি।
এরপরেও মির্জা অপহরণকারীদের অনুসরণ করার জন্য হেলিকপ্টার মোতায়েনের মতো ‘তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অভাব’ এর সমালোচনা করেছিলেন। তিনি সুরক্ষার ত্রুটিটিকে অত্যন্ত সন্দেহজনক এবং সম্ভাব্য আঁতাতের ইঙ্গিত হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
মির্জা আরও অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রগুলোর কাছে গোপনে পরমাণু প্রযুক্তি বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পারমানবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) উচিত এ ঘটনার স্বাধীন তদন্ত শুরু করা।
সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা তুলে ধরে মির্জা পাকিস্তানের পারমাণবিক সম্পদ ও কর্মসূচির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিলে বিষয়টি উত্থাপন করার আহ্বান জানিয়ে জোর দিয়েছিলেন যে পারমাণবিক প্রযুক্তি ও উপকরণগুলির অননুমোদিত স্থানান্তর বিশ্বব্যাপী শাসনের জন্য একটি বড় হুমকি সৃষ্টি করেছে, বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)।
পাকিস্তানে পরমাণু নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যে মির্জার এই বিবৃতি এসেছে, পরমাণু ইঞ্জিনিয়ারদের অপহরণের ঘটনা স্পর্শকাতর পদার্থের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিনি আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষকে আরও উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধ করতে এবং এই অঞ্চলে পারমাণবিক সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এএনআই ইনপুট সহ।
নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের অপহরণ করা হয়েছে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়ে। এর মধ্যে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা নিয়েও নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এর মধ্য়েই মুখ খুললেন এক মানবাধিকার কর্মী।