রাজীব জয়সওয়াল
গত কয়েক বছরে কীভাবে সাধারণ মানুষের আয়ের পরিমাণ একেবারে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তার একটা পরিসংখ্য়ান সামনে এসেছে এবার।
১ কোটি টাকার বেশি বার্ষিক আয়ের রিপোর্ট করা করদাতার সংখ্যা ২০১৩-১৪ সালে ৮২,৮৩৬ থেকে ২০২৩-২৪ সালে ৩২৩% বেড়ে ৩,৫০,১২৯ হয়েছে, অন্যদিকে আয়কর মূল্যায়নের সংখ্যা গত দশকে ১২০% বেড়ে ৭,৯২,১২,১৪৬ হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে মধ্যবিত্তকে রক্ষা করার সময় করের ভিত্তিকে আরও গভীর ও প্রশস্ত করার জন্য সরকারের নীতির ইঙ্গিত দেয়। কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত এক দশকে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে মোট আয়ের করদাতার সংখ্যা ৪৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০১৩-১৪ সালে ১০৯,১৭১ থেকে বেড়ে ২০২৩-২৪ সালে ৫৮৯,৭৬২ হয়েছে।
উন্নত প্রযুক্তি-চালিত পদ্ধতির জেরে, ৫০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ের রিটার্নের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাময়িক তথ্য উদ্ধৃত করে তারা বলেছে যে সম্মতি সহজীকরণের কারণে ১০ বছরে ২০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা আয়কারী করদাতাদের সংখ্যা ৫২৬.৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁদেরই এক আধিকারিক বলেন, 'গত ১০ বছরে ২০ লক্ষ টাকার কম আয়ের মানুষ, অর্থাৎ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের করের বোঝা কমানোর জন্য সরকার সচেতন প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
দ্বিতীয় আধিকারিক বলেন, ' কর ফাঁকি রুখতে মোদী সরকারের একাধিক পদক্ষেপের ফলে ৫০ লক্ষ টাকার বেশি আয়কারীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল প্রায় পাঁচগুণ বেড়েছে, যাঁরা মোট আয়করের ৭৬ শতাংশ অবদান রাখেন, ফলে মধ্যবিত্তের উপর করের বোঝা কমবে।
মোদী সরকারের ছাড়ের সীমা বাড়ানোর পদক্ষেপের কারণে ২০১৪ সাল থেকে শূন্য আয়কর রিটার্নের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, শূন্য আয়কর রিটার্ন (আইটিআর) দাখিলকারীর সংখ্যা ২০১৪ সালে ১ কোটি ৮০ লাখ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ৪ কোটি ৯০ লাখে দাঁড়িয়েছে, যা ১৭২ শতাংশ বেশি।
২০১৪ সালের আগে মধ্যবিত্তদের উপর "অন্যায্য করের বোঝা" ছিল কারণ ২ লক্ষ টাকার বেশি আয়ের লোকদের কর দিতে হয়েছিল। ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়। ১০ লক্ষ টাকার কম আয়কারী করদাতাদের কাছ থেকে আয়কর আদায়ের হার ২০১৪ সালে প্রদত্ত মোট করের ১০.১৭ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ৬.২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, গত এক দশকে মধ্যবিত্ত করদাতাদের গড় করের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আয়ের মধ্যে প্রদত্ত গড় আয়কর ২.৩ লক্ষ টাকা থেকে ১.১ লক্ষ টাকায় নেমে এসেছে। ১৫-২০ লক্ষ টাকার কর বন্ধনীর ক্ষেত্রে গড় কর ৪.১ লক্ষ টাকা থেকে কমে ১.৭ লক্ষ টাকা হয়েছে।