২০১৯–২০ সালে মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুটের সংখ্যা মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বেশি। সম্প্রতি ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাসের রিপোর্ট অনুযায়ী এমন তথ্যই উঠে এসেছে। এই রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে মাধ্যমিক স্তরের তুলনায় প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে অবশ্য স্কুলছুটের সংখ্যা অনেকটাই কম।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুটের সংখ্যা প্রায় ১৭ শতাংশেরও বেশি। তবে উচ্চ প্রাথমিকে ও প্রাথমিক স্তরে স্কুলছুটের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। উচ্চ প্রাথমিক স্তরে স্কুল ছুটের সংখ্যা ১.৮ শতাংশ ও প্রাথমিক স্তরে স্কুল ছুটের সংখ্যা ১.৫ শতাংশ। মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুটের মধ্যে ছেলে ও মেয়ের ভাগ কত, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, ছেলেদের মধ্যে ১৮.৩ শতাংশ স্কুলছুট করেছে। অন্যদিকে মেয়েদের মধ্যে ১৬.৩ শতাংশ গত শিক্ষাবর্ষে স্কুলছুট হয়েছে। প্রাথমিক স্তরেও একই চিত্রই ধরা পড়েছে। সেখানে মেয়েদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় কিছুটা হলেও বেশি। মেয়েদের মধ্যে স্কুল ছুটের হার যেখানে ১.২ শতাংশ, সেখানে ছেলেদের মধ্যে স্কুলছুটের হার ১.৭ শতাংশ। তবে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে স্কুল ছুটের সংখ্যা অবশ্য কিছুটা হলেও আলাদা। সেখানে মেয়েদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় বেশি। মেয়েদের মধ্যে যেখানে স্কুল ছুটের হার ২.২ শতাংশ, সেখানে ছেলেদের মধ্যে স্কুল ছুটের হার ১.৪ শতাংশ। রিপোর্টে আরও একটি বিষয় বেরিয়ে এসেছে, দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ পড়ুয়া মাধ্যমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়তে যায় না।
রাজ্য ভিত্তিক বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, দেশের ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকায় স্কুলছুটের হার দেশের সার্বিক স্কুলছুটের হারের থেকে বেশি, যেটা খুবই চিন্তার বিষয়। ত্রিপুরা, সিকিম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মধ্যপ্রদেশ, অসম ও অরুণাচল প্রদেশে স্কুলছুটের হার ২৫ শতাংশের বেশি। চারটি রাজ্যে স্কুলছুটের পরিমাণ ৩০ শতাংশেরও বেশি। পূর্ব ও উত্তর পূর্বের রাজ্যে স্কুলছুটের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। রাজধানী দিল্লিতে এই স্কুল ছুটের পরিমাণ ২০ শতাংশেরও বেশি। তবে সবচেয়ে কম স্কুলছুটের হার রয়েছে পঞ্জাবে। সেখানে হার মাত্র ১.৫ শতাংশ। একইসঙ্গে যেসব রাজ্যে স্কুল ছুটের হার দশের কম, সেগুলি হল মণিপুর (৯.৬ শতাংশ), তামিলনাডু (৯.৬ শতাংশ), উত্তরাখণ্ড (৯.৮ শতাংশ), চণ্ডীগড় (৯.৫ শতাংশ) ও কেরালা (৮ শতাংশ)। সবমিলিয়ে দেখতে গেলে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের স্কুলছুটের সংখ্যা ২ শতাংশ কম। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, পঞ্জাবে যেখানে মেয়েদের স্কুলছুটের সংখ্যা শূন্য, সেখানে অসমে মেয়েদের স্কুল ছুটের হার মাধ্যমিক স্তরে ৩৫.২ শতাংশ। ৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত এলাকা আছে, যেখানে ছেলেদের স্কুল ছুটের হার ৩০ শতাংশেরও বেশি। উল্লেখ্য ২০১২–১৩ সাল থেকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ সব স্কুলগুলিকে নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়। দেশের প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি স্কুল, ৮৫ লাখ শিক্ষক ও ২৫ কোটি ছেলেমেয়ের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে।