বিশ্ববিখ্যাত হ্যাজেলনাট কোকো স্প্রেড ‘নাটেলা’র জনক হিসেবে পরিচিত ফ্রান্সেসকো রিভেলা প্রয়াত হয়েছেন। বিভিন্ন রিপোর্টের থেকে জানা গিয়েছে, ভালেন্টাইন্স ডে-র দিনে তিনি মারা যান। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিব ৯৭ বছর। নাটেলার ‘জনক’ হিসেবে পরিচিত রিভেলা ১৯৫২ সালে ইতালীয় চকলেট কোম্পানি ফেরেরোতে কাজ শুরু করেছিলেন। নাটেলার উদ্ভাবনের দুই বছর আগে তিনি এই কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে পিয়েত্রো ফেরেরো এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এদিকে ফেরেরোতে যোগদানের সময় তিনি ২৫ বছর বয়সি এক যুবক ছিলেন। টুরিনে ব্রোম্যাটোলজিক্যাল কেমিস্ট্রিতে ডিগ্রি অর্জন করে সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়েছিলেন রিভেলা। (আরও পড়ুন: ভারতে খোঁজ মিলল 'সোরোসের এজেন্টের'! $২১ মিলিয়ন নিয়ে বিতর্কের মাঝে সামনে নয়া দাবি)
আরও পড়ুন: ছাত্রদল বনাম বৈষম্য বিরোধীদের সংঘর্ষে জখম শতাধিক; নামল সেনা, BGB, নৌসেনা, ব়্যাব
নিউ ইয়র্ক পোস্টের একটি প্রতিবেদনের মতে, রিভেলা ফেরেরোর ‘কেমিস্ট্রি রুমের’ অংশ ছিলেন। নতুন পণ্য উদ্ভাবনের দায়িত্ব ছিল এই বিভাগের ওপর। এর জন্য নানান কাঁচামালের উপর গবেষণা করতে হত। সেই দলের সাথেই কাজ করতেন রিভেলা। বিভিন্ন উপকরণের মিশ্রণ, পরিশোধন এবং স্বাদ পরীক্ষা করতেন তিনি। এই কক্ষেই ফেরেরোর কিছু সবচেয়ে আইকনিক পণ্যের জন্ম হয়েছিল। রিভেলা পরবর্তীতে কোম্পানির একজন সিনিয়র ম্যানেজার হন।
তিনি পরে ফেরেরোর ছেলে মিশেল ফেরেরোর ডানহাত হয়ে যান। পারিবারিক ব্যবসাটি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন মিশেল। প্রসঙ্গত, মিশেল ফেরেরোও ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখেই মারা গিয়েছিলেন। অবশ্য সালটা ছিল ২০১৫। রিভেলার মৃত্যুর ঠিক ১০ বছর আগে।
আড়াও পড়ুন: 'ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার কেন দিচ্ছে আমেরিকা?' এবার মুখ খুললেন ট্রাম্প
প্রতিবেদনের মতে, অবসরের পর রিভেলা ফলের চাষ করতেন। তাঁর তিন ছেলে, এক মেয়ে এবং সাত নাতি-নাতনি ছিল। রিভেলার শেষকৃত্য সোমবার অনুষ্ঠিত হয় আলবায়। অবসরের পরে সেখানেই তিনি বসবাস করতেন। প্রতিবেদনের মতে, তাকে বার্বাস্কোতে সমাহিত করা হবে।
নাটেলার গল্প
নাটেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ইতালিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে উৎপত্তি হয়েছিল নাটেলার। সেই সময়টায় কোকো অত্যন্ত দুর্লভ হয়ে পড়েছিল। রিভেলার প্রচেষ্টায় ফেরেরো এই সমস্যার সমাধান করেছিল ‘হ্যাজেলনাট, চিনি এবং অল্প পরিমাণ কোকো দিয়ে তৈরি একটি মিষ্টি পেস্টে’র মাধ্যমে।
১৯৪৬ সালে তৈরি নাটেলার প্রথম সংস্করণটি 'Giandujot' নামে পরিচিত ছিল। এই নামটি ‘Gianduja’ থেকে এসেছে, যা চকলেট এবং হ্যাজেলনাট দিয়ে তৈরি একটি মিষ্টি। সেই সময় যে পেস্ট তৈরি হয়েছিল, তা রুটির আকারে বিক্রি করা হত। তা কেটে রুটিতে ছড়িয়ে দেওয়া যেত।
এছাড়াও পড়ুন: জারি কারফু-নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশি পাচারকারীদের ভাতে মারতে কড়া পদক্ষেপ সীমান্তে
Giandujot পেস্টটি পরে একটি ক্রিমি নতুন পণ্যে পরিণত করা হয়। তা ছড়িয়ে দেওয়া সহজ ছিল। ফেরেরো এর নাম রাখে 'SuperCrema'। ‘Nutella’ নামটি অনেক পরে, ১৯৬৪ সালে এসেছিল। ততদিনে এর রেসিপি আরও উন্নত করা হয় এবং হ্যাজেলনাট এবং কোকো ক্রিম দিয়ে তৈরি এই পেস্ট জারে বিক্রি করা শুরু হয়। এই স্প্রেডটি ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা হয় এবং বিশ্বব্যাপী এত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে ২০০৭ সাল থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব নাটেলার দিবস হিসেবে পালিত হয়।