এইচ১-বি ভিসা নিয়ে প্রোক্লেমেশনে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার নতুন করে এইচ-১বি ভিসার আবেদন করলে দিতে হবে ১ লক্ষ ডলার। যার জেরে চিন্তা বাড়ছে ভারতীয়দের। এই আবহে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা এনভিডিয়া ভিসা স্পন্সর অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন বিদেশি কর্মীরা।
এনভিডিয়া-র সিইও জেনসেন হুয়াং কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন, তারা আগের মতোই ভিসা স্পন্সর করবে এবং সব খরচ সংস্থা বহন করবে। বিজনেস ইনসাইডার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনভিডিয়া-র কর্মীদের উদ্দেশে পাঠানো এক বার্তায় হুয়াং বলেন, 'আমি নিজেও এনভিডিয়ার অনেক অভিবাসীর একজন। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সুযোগ পেয়েছি, তা আমাদের জীবন বদলে দিয়েছে। এনভিডিয়ার এই সফলতা অভিবাসী প্রতিভাবান মানুষদের ছাড়া সম্ভব হতো না। তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নেতৃত্ব ধরে রাখতে বৈধ অভিবাসন অত্যন্ত জরুরি। এই জন্য এনভিডিয়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মেধাবী মানুষদের সুযোগ দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, 'আমরা আমাদের কোম্পানি গড়েছি বিশ্বের সেরা মেধাবীদের নিয়ে। আমরা এইচ-১বি ভিসার আবেদনকারীদের স্পন্সর করা অব্যাহত রাখব এবং সব সরকারি ফি ও খরচ নিজেরাই বহন করব।'
এইচ-১বি ভিসা ও জটিলতা
গত ১৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রাম সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেন এবং নতুন করে ১ লক্ষ ডলার আবেদন ফি নির্ধারণ করেন। তার যুক্তি, ‘এর ফলে কোম্পানিগুলি স্থানীয় আমেরিকানদের নিয়োগে উৎসাহিত হবে।’ মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, বড় কোম্পানিগুলি এত খরচ বহন করবে না। এতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ কমে যাবে। বলে রাখা ভালো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসায় কর্মরতদের মধ্যে ৭১ শতাংশই ভারতীয়। এরপর সবথেকে বেশি রয়েছে চিনের নাগরিক। ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন নিয়মে কোনও মার্কিন কোম্পানি যদি এইচ-২বি ভিসায় বিদেশি কর্মীকে নিয়োগ করে, তাহলে বার্ষিক ১ লক্ষ মার্কিন ডলার দিতে হবে। ছয় বছর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদের উপরে এই নিয়ম কার্যকর হবে। তবে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট জানিয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বরের পরে যারা নতুন করে এইচ-১বি ভিসায় আবেদন করবেন, তাদের এই ১ লক্ষ মার্কিন ডলার দিতে হবে। তার আগে যারা আবেদন করে রেখেছেন, তাদের এই ফি দিতে হবে না।
তবে মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে মামলা করেছে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় সংগঠন। তারা অভিযোগ করেছে, এই ফি ‘অন্যায়, অযৌক্তিক ও বেআইনি।’ তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন নীতি পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন না।