দেবব্রত মোহন্তি
কোনও ‘লোকারণ্য’ নয়, ‘মহা ধুমধাম’ নয়। সাদামাটাভাবে দুর্গাপুজো, কালীপুজো, লক্ষ্মীপুজোর মতো পার্বণগুলি পালিত হবে ওডিশায়। বৃহস্পতিবার এক সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, জনগণের অংশগ্রহণ এবং কোনও বাজনা, সঙ্গীত ছাড়াই চলতি মাস থেকে শুরু হওয়া পুজোপার্বণগুলি রাজ্যে পালন করা যাবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করে মুখ্যসচিব অসিত ত্রিপাঠী জানান, কেবলমাত্র আচার, অনুষ্ঠান পালন করার উদ্দেশে ঘরোয়াভাবে পুজো করা যেতে পারে। যেখানে বড় আকারের জনগণ কোনওমতে অংশ নিতে পারবে না।
নির্দেশিকার জানানো হয়েছে, পুজো মণ্ডপগুলিকে তিনদিক দিয়ে পুরোপুরি ঘিরে রাখতে হবে। চতুর্থ দিক অর্থাৎ যেদিকটা খোলা থাকবে সেটিকে এমন কায়দা করে ঢেকে রাখতে হবে যাতে বাইরে থেকে কোনও প্রতিমা একেবারে প্রকাশ্যে না দেখা যায়। জনসাধারণ বা ভক্তদের জন্য কোনওরকম প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থা রাখা যাবে না। পুজোগুলিতে প্রতিমার উচ্চতাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রতিমাগুলির উচ্চতা ৪ ফুটের কম রাখতে হবে। লাউডস্পিকার, জায়েন্ট স্ক্রিনের মতো কোনও পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে না। কোনও গানবাজনা বা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, পুজো কমিটির লোকজন, পুরোহিত, সহায়তা কর্মী মিলিয়ে ৭ জনের বেশি মানুষ কোনওমতে একসঙ্গে মণ্ডপের ভেতরে থাকতে পারবে না। মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মণ্ডপের ভেতর থাকা যাবে। কেন্দ্র, রাজ্য বা স্থানীয় প্রশাসনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সকলকে। মণ্ডপ এবং মণ্ডপ চত্বর নিয়মিত স্যানিটাইজ করতে হবে।
১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজোর মধ্য দিয়ে এবারের উৎসবের মরশুম শুরু হতে চলেছে। এর পরই ১৬ অক্টোবর দেবীদুর্গার মহাষ্টমী পুজো, ২৩ অক্টোবর লক্ষ্মীপুজো এবং ১৪ নভেম্বর কালীপুজো অর্থাৎ দীপাবলি। কোনও পুজোর ক্ষেত্রেই ধুমধাম করে বিসর্জনের শোভাযাত্রা আয়োজন করা যাবে না। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি করা কৃত্রিম জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে।
পুজো সংক্রান্ত এই নির্দেশিকা দেওয়ার দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই ওডিশায় নতুন করে ৩৯৯১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যা সাম্প্রতিককালে সর্বোচ্চ। আর এদিন করোনা আক্রান্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, অগস্ট মাসে কটক শহরের সবচেয়ে পুরনো দুর্গাপুজো আয়োজক বালু বাজার পুজো কমিটিকে এবারের পুজো আয়োজন করার অনুমতি দেয় ওডিশা হাইকোর্ট। তবে সেক্ষেত্রে কোনওভাবেই জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং কড়াকড়ি ভাবে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। ওই মাসেই কিছু ব্যবসায়ী গণেশ পুজো করার ব্যাপারে হাইকোর্টে দরবার করতে আদালত জানায়, এ সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে রাজ্য সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।