খোদ রাজ্যপালের (প্রাক্তন) ছেলের বিরুদ্ধে হেনস্থা ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল। অথচ, গত সাতমাসেও সেই ঘটনায় নাকি কোনও লিখিত অভিযোগই দায়ের করা হয়নি!
এই ঘটনা ঘটেছে ওডিশায়। অভিযোগটি হল - গত বছর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু যখন রাজ্য সফরে আসেন, সেই সময়েই ওডিশার প্রাক্তন রাজ্যপাল রঘুবর দাসের ছেলে নাকি রাজভবনের এক কর্মীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন! তাঁকে হেনস্থা ও মারধর করেন!
সোমবার এই ঘটনা নিয়ে ওডিশা বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। তিনি জানান, সাতমাসের বেশি সময় কেটে গেলেও এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারীর তরফে লিখিতভাবে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি।
এই ঘটনায় বিধানসভায় একটি প্রশ্ন উত্থাপিত করেছিলেন বিজেডি বিধায়ক প্রতাপ কেশরি। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, গত বছর জুলাই মাসে যখন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ওডিশায় আসেন, সেই সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট সেকশন অফিসার (এএসও) বৈকুণ্ঠ নাথ প্রধান অভিযোগ করেছিলেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল রঘুবর দাসের ছেলে তাঁকে হেনস্থা করেছেন।
সেই অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে কী হল, সেই প্রশ্নই তুলেছিলেন প্রতাপ। যার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এমন কোনও লিখিত অভিযোগই দায়ের করা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, 'গত বছরের ১০ জুলাই তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছিল, কিংবা তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছিল - কোনও এএসও-র কাছ থেকে এই সম্পর্কিত কোনও লিখিত অভিযোগ পুরীর সি বিচ থানায় জমা পড়েনি। ২০২৪ সালের ১২ জুলাই অনলাইনে একটি অভিযোগ এসেছিল - যার নম্বর - ২৪৫০২০৩৮০৭২৪০০০৬৭। শ্রী বৈকুণ্ঠ প্রধান এই অভিযোগ করেছিলেন। যার কোয়ার্টার নম্বর ছিল ১৪/০২। সিসিটিএনএস-এর মাধ্যমে ভুবনেশ্বরের ৯ নম্বর ইউনিট সেই অভিযোগ পেয়েছিল। যা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।'
এর আগে দাবি করা হয়েছিল, গত বছর ৭ জুলাই পুরীর রাজভবনে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় ললিত কুমার তাঁর পাঁচ শাগরেদের হাতে প্রহৃত হন বৈকুণ্ঠ নাথ প্রধান। তাঁকে থাপ্পড়, ঘুসি এবং লাথি মারা হয়। সেই সময় রাষ্ট্রপতির সফরের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার কাজে নিযুক্ত ছিলেন বৈকুণ্ঠ। ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ৭ জুলাই রাত পৌনে বারোটা নাগাদ।
এই ঘটনার পর সরকারের সমালোচনায় সরব হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা নবীন পট্টনায়েক। তাঁর অভিযোগ ছিল, সরকার প্রাক্তন রাজ্যপালের ছেলের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করছে না। কারণ, তিনি প্রভাবশালীর ছেলে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দাবি তোলা হয়।
এরপর রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়, পুরীর জেলাশাসক ঘটনার তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন। কিন্তু, সেই তদন্ত কবে হল, কবে তার রিপোর্ট জমা পড়ল, তা জানা যায়নি।
দিন দুয়েক আগে বৈকুণ্ঠর স্ত্রী বর্তমান রাজ্যপাল হরিবাবু কাম্ভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেন। তাঁর দাবি ছিল, গত বছরের ওই ঘটনায় পদক্ষেপ করা হোক। কিন্তু, তাঁকে রাজ্যপাল দেখা করার সময় দেননি। ইতিমধ্যে, বৈকুণ্ঠকেও রাজভবনের ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।