ওড়িশার একটি জেলা আদালত প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক নাগিরেড্ডি নারায়ণ রেড্ডিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল। ১৯৮৮ সালের জুন মাসে টাটা স্টিলের প্ল্যান্ট তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছিল। সেই সময় সংঘর্ষে এক পুলিশ ইনস্পেক্টরের মৃত্যু হয়। সেই মামলায় এবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল প্রাক্তন বিধায়কের।
রেড্ডি সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে এই সাজার নির্দেশ দিয়েছে ওড়িশার ব্রহ্মপুরের আদালত। ২০০৪-২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি ছত্রপুর বিধানসভার বিধায়ক ছিলেন। ১৯৯৮ সালে টাটা স্টিলের কারখানা তৈরির জন্য় জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন ছিল। ১৮ জুন এলাকায় মিটিং ডেকেছিল প্রশাসন। সিন্ধিগাঁও গ্রামে আচমকাই সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সেই সময় পুলিশের ইনস্পেক্টর বিনোবা মেহেরকে খুন করা হয়। তারপর রেড্ডি সহ ২২জনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা করা হয়। তবে বাকি ৮জন অভিযুক্তের আগেই মৃৃত্যু হয়েছে।
সূত্রের খবর, সেই সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয়েছিল। তাতেই ওই পুলিশ আধিকারিকের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৫ বছর। সেই সময় এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ঠিকঠাক থাকে সেকারণে সেখানে তিনি মোতায়েন ছিলেন।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিরঞ্জন পাধি জানিয়েছেন, ওই পুলিশ আধিকারিককে লক্ষ্য করে সেদিন বোমা ছোঁড়া হয়েছিল। তাতে তাঁর পেট মারাত্মকভাবে জখম হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় তার। ২২জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সকলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত সেই সময় ওই পুলিশ আধিকারিকের বদলির নির্দেশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এলাকায় অশান্তির জেরে তাঁকে থেকে যেতে হয়। পুলিশ সুপারের অনুরোধে তিনি কয়েকদিন থেকে যান। আর তখনই এই মর্মান্তিক ঘটনা।
তবে উচ্চতর আদালতে যাবেন ওই প্রাক্তন বিধায়ক। এমনটাই খবর।
রেড্ডি মূলত শ্রমিক সংগঠন করেন। ২০১১ সালেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেখানেও শ্রমিকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৯৫ সালে টাটা স্টিল গঞ্জাম জেলার গোপালপুরে কারখানা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেখানে তাদের প্রায় ৩০০০ একর জমির প্রয়োজন ছিল। তবে সেই জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে সেখানে অধিগৃহীত জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও শিল্প পার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।