কেন ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হল? তা নিয়ে রবিবার থেকেই কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল প্রশ্ন তুলেছে। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতীয় রেলের প্রাথমিক তদন্তে যে তথ্য মিলেছে, তাতে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে প্রাথমিক তদন্তে ‘ইচ্ছাকৃত হস্তক্ষেপ’-র ইঙ্গিত মিলেছে। সেই পরিস্থিতিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে সিবিআইয়ের মতো পেশাদারি তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিকরা।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্র উদ্ধৃত করে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই ওড়িশার রেল দুর্ঘটনার তদন্তভার নিজেদের হাতে তুলে নেবে সিবিআই। ওড়িশা পুলিশের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে দিল্লির সদর দফতরের স্পেশাল ক্রাইম ইউনিটের হাতে সেই দুর্ঘটনার তদন্তভার যাবে বলে সূত্রের খবর। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭ ধারা, ৩৮ ধারা (দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে জীবনকে ঝুঁকি ফেলে দেওয়া, আঘাতের সঙ্গে সম্পর্কিত), ৩০৪এ (দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য মৃত্যু), ৩৪ ধারার (সাধারণ অভিপ্রায়) মতো বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ভারতীয় রেল আইনের একাধিক ধারাও যুক্ত করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বাহানগা বাজার স্টেশন পেরিয়ে মেন লাইনের পরিবর্তে লুপ লাইনে ঢুকে গিয়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস (গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটারের বেশি ছিল)। যে লুপ লাইনে আগে থেকেই দাঁড়িয়েছিল একটি মালগাড়ি। ওই মালগাড়িতে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়ে যায় করমণ্ডলের একাধিক কোচ। ছিটকে পড়ে অন্য লাইনে। সেইসময় উলটো দিকের লাইন দিয়ে আসছিল ডাউন SMVT বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডলের কোচে ধাক্কা মেরে হাওড়াগামী ট্রেনের কয়েকটি কোচও লাইনচ্যুত হয়ে যায়। সেই ঘটনায় সার্বিকভাবে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১,০০০ জনের বেশি। সেই পরিস্থিতিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রবিবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দাবি করেন, ইলেট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের (যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনও রুট সুরক্ষিত বলে না নিশ্চিত হলে কোনও ট্রেনকে সিগন্যাল দেওয়া হবে না) পরিবর্তনের কারণে সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটি আলাদা বিষয়। পয়েন্ট মেশিন এবং ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সংক্রান্ত বিষয়। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের সময় যে পরিবর্তন হয়েছিল, সেটার কারণে এই দুর্ঘটনা হয়েছে। কে সেই কাজটা করেছে এবং কীভাবে সেই কাজটা হয়েছে, সেটা উপযুক্ত তদন্তের পরে খুঁজে বের করা হবে।’
তারপর রবিবার সন্ধ্যায় রেলমন্ত্রী জানান, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের বিপর্যয় কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছে রেলওয়ে বোর্ড। তিনি বলেন, ‘যে পরিস্থিতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, যে পরিস্থিতি আছে এবং যে সব প্রশাসনিক তথ্য মিলেছে, সেটা বিবেচনা করে পুরো বিষয়টির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে রেলওয়ে বোর্ড।’
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)