ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারার অধীনে কোনও মহিলাকে উত্যক্ত করার ঘটনায় পুরুষের পাশাপাশি মহিলাও দোষী হতে পারে। এমনই পর্যবেক্ষণ করল মুম্বইয়ের এক আদালত। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এমভি চহ্বান এই বিষয়ে বলেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা যে শুধুমাত্র যৌন নিগ্রহের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এমনটা নয়। কারণ এই ধারাটি ক্রিমিনাল ফোর্স এবং অ্যাসল্ট অধ্যায়ের অধীনে অন্তর্ভুক্ত।’
সাধারণত যৌন রঞ্জিত মন্তব্য করা হলে, কোনও মহিলার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁকে অশ্লীল কিছু দেখানো হলে, যৌন প্রশ্রয়ের অনুরোধ, শারীরিক সম্বন্ধের অবাঞ্চিত প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। যদিও মুম্বইয়ের আদালতের বিচারকের পর্যবেক্ষণ, ৩৫৪ ধারার অধীনে অপরাধ সংঘটিত করতে পারে পুরুষ বা মহিলা। এমনকি একজন মহিলা অন্য মহিলার শালীনতাকে খর্ব করে তাঁকে উত্যক্ত করার অভিপ্রায়ে আক্রমণ করলে বা অপরাধমূলক শক্তি ব্যবহার করলে তা ৩৫৪ ধারার অধীনে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিচারক বলেন, ‘সজ্ঞানে যদি কোনও নারীর শালীনতা ক্ষুন্ন করা হয়, তাহলে অভিযুক্ত পুরুষ হোক কি মহিলা, সে অপরাধী এবং এর জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারার অধীনেই শাস্তি দেওয়া হবে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা পুরুষ বা মহিলা, সকলের ওপরই সমানভাবে প্রযোজ্য। এই ধারার অধীনে কোনও অভিযুক্ত মহিলাকে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দেওয়া যায় না।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে অভিযুক্ত মহিলা সর্বসমক্ষে নির্যাতিতাকে গালি দেন এবং প্রহার করেন। পাশাপাশি নির্যাতিতার পোশাকও ছিড়ে দিয়েছিল অভিযুক্ত মহিলা। এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল। এদিকে অভিযুক্ত দাবি করেছিল যে এই এই এফআইআর ভুয়ো দাবির ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৪ এবং ৩৫৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছিল। এই আবহে অভিযুক্তের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, যেহেতু এই ঘটনায় উভয়ই মহিলা, তাই ৩৫৪ ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা অযৌক্তিক। তবে আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে। অভিযুক্তকে ৩২৩ এবং ৩৫৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এক বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৬০০০ টাকার জরিমানার রায় শোনায় আদালত।