বিশ্বজুড়ে ত্রাস তৈরি করেছে করোনার ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের প্রবল সংক্রামক ক্ষমতায় বিধ্বস্ত কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা। দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়া এই করোনার এই ভ্যারিয়েন্টের নেতৃত্বাধীন কোভিড স্রোতে ইতিমধ্যেই ভারত দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় ফের একবার ২ লাখের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এদিকে, এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিভিন্ন গবেষণাও শুরু হয়ে গিয়েছে। শরীরে ওমিক্রনই বাসা বেঁধেছে কী না, তা কীভাবে বোঝা যাবে? এর উত্তর দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎকরা।
একাধিক গবেষণায় জানা যাচ্ছে যে, এই ওমিক্রনের উপসর্গ করোনা ভাইরাসের বাকি ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গের থেকে অনেকটাই আলাদা। মসিনা হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক সোনম সোলাঙ্কি বলছেন, সাধারণত দেখা যাচ্ছে, ওমিক্রন হলে, রোগীর দেহে আগে ব্যথা শুরু হচ্ছে। গা ব্যথা এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রমণের অন্যতম উপসর্গ। চিকিৎসক বলছেন, এছাড়াও, প্রথম কয়েকদিন , দুর্বলতা অনুভব হতে পারে, সঙ্গে ক্লান্তি থাকবে, মাথার যন্ত্রণা থাকবে, আর থাকবে জ্বর। সোনম সোলাঙ্কির মতে, 'এমনকি কাশিও থাকতে পারে, কখনও তা শুকনো হতে পারে। ঠাণ্ডা লেগে কখনও নাক দিয়ে জল গড়াতে পারে, সঙ্গে থাকবে হাঁচি।'
চিকিৎসক সোনম সোলাঙ্কি বলছেন, '৮০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রথম তিন দিনেই জ্বর কমে যাচ্ছে। যদি তা না হয়, তাহলে এটা লক্ষণ যে পরিস্থিতি গুরুতর দিকে যেতে পারে। সংক্রমণ গুরুতর হতে পারে। ফলে সেক্ষেত্রে কড়া নজরদারি প্রয়োজন।' ওমিক্রনের সংক্রামক ক্ষমতা যেহেতু করোনার বাকি ভ্যারিয়েন্টের থেকে অনেক বেশি, তাই ওমিক্রন রোখার একমাত্র বড় উপায় হল, সময়মতো আইসোলেশন। তিনি বলছেন, শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন চেস্ট করা প্রয়োজন। তবে উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও যদি অ্যান্টিজেন টেস্টে নেগেটিভ আসে, তাহলে আরটি-পিসিআর অবশ্যই করা উচিত। চিকিৎসকের মতে, শরীরে উপসর্গ আসছে মনে হলেই আগে এন ৯৫ মাস্ক ব্যবহার শুরু করে দিতে হবে। সোনম সোলাঙ্কির মতে, 'সাধারণ কাপড়ের মাস্ক বা সার্জিক্যাল মাস্ক উপযুক্ত হবে না যদি শরীরে করোনার উপসর্গ থাকে বলে মনে হয়। বিশেষত যদি কারোর কাশি থাকে।' উল্লেখ্য়, বেশ কয়েকটি সমীক্ষার দাবি, ওমিক্রন নির্ভর তৃতীয় স্রোত ভয়াবহ হতে চলেছে আর কয়েকদিনের মাথায়। আইআইটি কানপুরের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও গবেষক অধ্যাপক মণীন্দ্র আগারওয়ালের মতে, জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারির প্রথমে ভারতে কোভিডের তৃতীয় স্রোত আছড়ে পড়বে। সেই সময়ে আক্রান্তের দৈনিক সংখ্যা ৮ লাখ পর্যন্ত যেতে পারে বলে তাঁর সূত্র মডেলের গবেষণা দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে ওমিক্রন ঘিরে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশিষ্ট চিকিৎসকরা।