বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় এবার সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশের গুম সংক্রান্ত কমিশন। শুধু সেটাই নয়, সেদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘরে মানুষকে আটকে রাখা নিয়েও কমিশন হাসিনার জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে। কমিশনের অন্তর্বর্তী রিপোর্টে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এদিকে, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঢাকায় এদিন বিকেলে, যমুনায় সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের হাতে এই রিপোর্ট তুলে দেন কমিশনের সদস্যরা। মহম্মদ ইউনুসের প্রেস টিমের তরফে একথা জানানো হয়েছে। সেই রিপোর্টে বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে নির্দেশদাতা হিসাবে জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ কমিশন পেয়েছে বলে খবর। ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ এই শীর্ষক রিপোর্ট এদিন কমিশনের তরফে পেশ করা হয় ইউনুসের কাছে। এপর্যন্ত বাংলাদেশে গুম কমিশনের কাছে ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তারমধ্যে এখনও পর্যন্ত কমিশনের সদস্যরা ৭৫৮ টি রিপোর্ট যাচাই করেছেন। বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের প্রেস উইং বলছে, গুমের ঘটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। শুধু শেখ হাসিনাই নন, বাংলাদেশের হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্তারাও এই গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এই ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকি, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটারিং সেন্টারের প্রাক্তন পরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউর আহসান, পুলিশ অফিসার মোহম্মদ মণিরুল ইসলাম, মহম্মদ হারুন আর রশিদ।
এদিকে, গুম সংক্রান্ত কমিশনের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন যে তা সহজে শণাক্ত করা কঠিন। পরিকল্পনা আলাদা আলাদা করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিস্ফোরক দাবিতে তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে 'ভিকটিম' বিনিময় করে দিয়েছে বিভিন্ন বাহিনী।
জানা গিয়েছে, কমিশনের তরফে, বাংলাদেশে গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘর পরিদর্শন করারও অনুরোধ জানানো হয়। কমিশন মনে করছে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা সেখানে গেলে বন্দিরা অভয় পাবেন। তিনি সেই অনুরোধে সম্মতি দিয়েছেন বলে খবর। এদিকে জানা যাচ্ছে, কমিশনের সুপারিশে বাংলাদেশের ‘ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স’বা ব়্যাব-র বিলুপ্তির কথা বলা হয়।